Festive Mood

গোবিন্দের ইচ্ছায় উল্টো দিকে বইল গঙ্গার স্রোত, এক অজানা ঘটনা

কথিত আছে, কবি জয়দেবের মা যখন মৃত্যুশয্যায় তখন ছেলের কাছে গঙ্গাজল মুখে দেওয়ার শেষ ইচ্ছের কথা জানান। কিন্তু ওখানে গঙ্গা কোথায়!

পৌষ সংক্রান্তি মানেই যদি গঙ্গাসাগর হয়, তবে রাজ্যে পৌষ সংক্রান্তি মানে অজয় নদের ধারে বীরভূমের জয়দেব কেন্দুলি মেলাও। ৩ দিন ব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে মহাসমারোহে। হাজারো পসরা, অজয় নদের ধার, সর্ষের খেত, শীত মাটির গন্ধ, জনসমাগম। সবমিলিয়ে মহাধুমধাম কেন্দুলিতে। উপরি পাওনা আখড়ায় আখড়ায় বাউল গান। বাউলদের পীঠস্থান এই কেন্দুলি। দূর দূরান্ত থেকে যেমন মানুষ হাজির হন এখানে, তেমনই সব জায়গা থেকে বাউলরাও হাজির হন এখানে।

কুয়াশা ভরা ভোর। বেলা বাড়লে ছড়িয়ে পড়ে মিঠে রোদ। একটা চেনা গন্ধ নাকে এসে ঠেকে। এটাই শীতের বীরভূম। গঙ্গাসাগর যদি পৌষ সংক্রান্তির একটি গন্তব্য হয়, তবে রাজ্যের দ্বিতীয় গন্তব্যটি অবশ্যই জয়দেব কেন্দুলির মেলা। যেখানে মানুষের সঙ্গে বাউলের মহামিলন হয়। বাউলদের তীর্থস্থান হিসাবেও কেন্দুলি পরিচিত।


Joydev Kenduli Mela
জয়দেব মেলার ধার দিয়ে বয়ে যাওয়া অজয়, নিজস্ব চিত্র

কথিত আছে, কবি জয়দেবের মা যখন মৃত্যুশয্যায় তখন ছেলের কাছে গঙ্গাজল মুখে দেওয়ার শেষ ইচ্ছের কথা জানান। কিন্তু ওখানে গঙ্গা কোথায়! মায়ের তখন যা অবস্থা তাতে তাঁকে গঙ্গা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। আর তাঁর পক্ষেও অতদূর ভ্রমণ করে গঙ্গার জল নিয়ে আসার সময় থাকবে না। তখন নাকি মনে মনে শ্রীকৃষ্ণের কাছে এই ইচ্ছার কথা সর্বান্তকরণে জানান কবি জয়দেব। ঈশ্বরের কৃপায় সেই ইচ্ছাপূরণও হয়।

এই পৌষ সংক্রান্তির দিন ক্ষণিক সময়ের জন্য অজয় নদের জল উল্টোদিকে বয়। ঢোকে গঙ্গার ঘোলা জল! সেই জলই মায়ের মুখে তুলে দেন জয়দেব। সেই থেকেই পৌষ সংক্রান্তির দিন প্রায় শুকনো অজয় নদের জলে স্নান করা মহাপুণ্য বলে বিশ্বাস করেন মানুষজন।


Joydev Kenduli Mela
জয়দেব মেলায় আখড়া, নিজস্ব চিত্র

সেকথা মাথায় রেখে এদিনও অজয় নদে বহু মানুষ স্নান সারেন। ডুব দেওয়ার মত জলই পাওয়া মুশকিল হয়। তবু কনকনে ওই ঠান্ডা জলে ডুব কারও ঠান্ডা লাগার কারণ হয়না! বরং হাড়হিম করা জলের ওই স্পর্শে কোথাও যেন লুকিয়ে থাকে নিখাদ বিশ্বাসের অদ্ভুত আনন্দ।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button