ভবানীপুর ক্লাবে নিয়মিত অনুশীলন করতেন তিনি। ভাল বক্সার। রাজ্য স্তরে প্রতিযোগিতায় ভাল ফল তো বটেই, এমনকি জাতীয় স্তরেও তাঁর উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে। মহিলা বক্সার হিসাবে জ্যোতি প্রধানকে চিনত ভারতীয় বক্সিং জগত। ২২ বছরের সেই প্রতিভাবান বক্সারের মৃত্যু হল রিংয়েই। গত বুধবার সন্ধেয় ভবানীপুর ক্লাবে অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন জ্যোতি। আচমকাই অসুস্থ বোধ করেন। বুকে হাত দিয়ে বসে পড়েন।
অসুস্থ জ্যোতি দ্রুত জ্ঞান হারাতে থাকেন। ঢলে পড়েন। তখনই সকলে মিলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই জ্যোতির মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন হার্ট অ্যাটাকের জেরেই মৃত্যু হয় জ্যোতির। এমন একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না রাজ্যের বক্সিং দুনিয়া। তবে কী অসুস্থই ছিলেন জ্যোতি? জোর করে অনুশীলন করছিলেন? এমন নানা প্রশ্নও মুখে মুখে ঘুরছে।
জানা গেছে, জ্যোতি প্রধান আগামী সপ্তাহেই চাকরি পাচ্ছিলেন। অসম রাইফেলসে চাকরি করতে যাওয়ার কথা ছিল। একজন সফল খেলোয়াড় চাকরি পেয়ে জীবনকে আরও নিশ্চিন্ত করতে চলেছিলেন। জীবনের অন্যতম খুশির এই সময়। সেই খুশি উপভোগ করার ঠিক আগেই চলে গেলেন জ্যোতি। মাত্র ২২ বছরে শেষ হয়ে গেল এক খেলোয়াড়ের জীবন।
জ্যোতি বলেই নয়, ইদানিংকালে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের আচমকা মৃত্যু হয়েছে অনুশীলনের সময়। নিয়মিত একটানা অনুশীলনে তাঁদের শারীরিক কোনও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে কিনা তা কিন্তু দেখা হচ্ছেনা। সেভাবে নিয়মিত এসব খেলোয়াড়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বন্দোবস্ত নেই। ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে সেই পরিকাঠামোর অভাব আগেও ছিল, এখনও রয়েছে। স্পোর্টস মেডিসিন সর্বস্তরে পৌঁছয়নি। না এ বিষয়ে উদ্যোগী হচ্ছে ক্লাবগুলো, না হচ্ছে ক্রীড়া মন্ত্রক। ফলে খেলোয়াড়দের জীবনে নেমে আসছে মৃত্যু। তাতে কী সত্যিই কারও কিছু যায় আসছে! ২ দিন পরই সকলে ভুলে যাবেন জ্যোতির মত অনুশীলনে মৃত খেলোয়াড়দের নাম। কিন্তু এটাই কী ভারতে ক্রীড়া প্রতিভাদের প্রাপ্য? প্রশ্ন কিন্তু উঠছে।