বৃষ্টি হয়তো তখনও দাপট বাড়ায়নি। কিন্তু ঝোড়ো হাওয়া ছিল। ছিল মাঝেমধ্যে গায়ে টিপটিপ বারিধারা। তবু দীপাবলির রাতে বাজি পোড়ানোর আনন্দটা মাটি করতে চাননি শহরবাসী। ফলে ছাদে, দালানে, গলিতে, মাঠে অনেকেই বাজির ব্যাগ হাতে নেমে পড়েন। কিন্তু নেমেই বোঝেন এই আবহাওয়ায় আর যাই হোক বাজি পোড়ানো মুশকিল। বাতি জ্বালিয়ে রাখা যাচ্ছে না। হাওয়ার চোটে চরকি গোল গোল ঘোরার জায়গায় মাটিতে তাণ্ডব নাচছে। রংমশালের রঙিন শিখা এধার ওধার করছে দামাল হাওয়ায়। সঙ্গে জোলো হাওয়া আর হাল্কা বৃষ্টি আরও শোচনীয় করে তোলে পরিস্থিতি। যার জেরে কিছুক্ষণের মধ্যেই শহরে রঙিন বাজি পোড়ানো গুটিয়ে যায়। তবে শব্দবাজি পুড়েছে। তাও দেদার।
আবহাওয়ার কারণে রঙিন বাজি তেমন পোড়াতে না পেরে মানুষ যেন শব্দবাজিকেই হাতিয়ার করেন। কালীপুজোর রাতে প্রতিবারের মত বাজি পোড়ায় খামতি দেখা গেছে। অনেকেই আবহাওয়ার কারণে বাজির ব্যাগ রেখে দিয়েছেন। ভাইফোঁটায় আকাশ একটু পরিস্কার হলে তখন পোড়ানোর পরিকল্পনা করে ফেলেছেন অনেকেই। কিন্তু শব্দবাজি কলকাতা সহ জেলায় তার দাপট অব্যাহত রেখেছে। কলকাতায় শব্দবাজি পোড়ানোর অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।
গত কয়েক বছরে চিনা ফানুস বাজার মাতিয়েছে। আতসবাজি পোড়ানোর মতই কালীপুজো বা দিওয়ালির অঙ্গ হয়ে উঠেছে ফানুস। ফলে সন্ধে নামার পর অনেক বাড়ি থেকেই ফানুস ছাড়া হয়। কিন্তু ঝোড়ো হাওয়া আর বাতাসে জলীয় বাষ্পের প্রভাবে সেই ফানুসের আগুন জ্বলে উঠেছে হুহু করে। নিমেষে ফুরিয়েছে জ্বালানি। সেইসঙ্গে জ্বলন্ত অবস্থায় পাগলা হাওয়ার সঙ্গে প্রবল গতিতে ছুটে চলা ফানুস ভালো লাগার বদলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারও বাড়িতে ঢুকে যাওয়ার আতঙ্ক। সব মিলিয়ে ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টি শব্দদানবের তাণ্ডবে রাশ টানতে না পারলেও আলোর উৎসবে রঙিন বাজির রোশনাইকে ম্লান করে দিল অক্লেশে।