কালীপুজো বা দিওয়ালীর সঙ্গে আতসবাজির যে অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক রয়েছে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। শব্দবাজি নিষিদ্ধ। কেবল রঙিন শব্দহীন বাজি পোড়াতে পারবেন সকলে। তাও আদালতের নির্দেশ মেনে রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে। এটাই নিয়ম। ফলে শহর জুড়ে শব্দবাজি না থাকলেও দোকানে দোকানে রঙিন আতসবাজির পসরা। পাড়ার কোণায় কোণায় যেমন স্টল বসেছে বাজি সাজিয়ে। তেমনই আবার বাজি বাজারও পসরা সাজিয়ে বসেছে সেই গত সোমবার থেকে।
গত সোমবার থেকে টালা পার্কে প্রতিবারের মত বাজি বাজার বসলেও সেখানে ভিড় কিন্তু গত ৫ দিনে প্রায় হয়নি বললেই চলে। তার একটা অন্যতম কারণ বৃষ্টি। অনেকে বৃষ্টির মধ্যে বাজি কেনার ঝুঁকি নেননি। ফলে বাজি বিক্রেতারাও চিন্তায় পড়েছিলেন। কলকাতা পুলিশের উদ্যোগে বাজি বাজার যেমন মাছি তাড়াচ্ছিল। তেমনই মার খাচ্ছিল পাড়ার দোকানগুলো। বৃষ্টির জন্য দোকান সাজিয়েও অনেকে বাজি সরিয়ে দোকান বন্ধ করে দেন। বাজি ভিজলে তা শেষ। তাই সেই ঝুঁকি নেননি। হয়তো ঢাকা দিয়ে ব্যবস্থা করার চেষ্টা হত। কিন্তু ব্যবসা না থাকলে লাভ কি!
বাজি বাজার কিন্তু শনিবার থেকে জমে উঠেছে। হাতে আর ২ দিন। শনিবার আর রবিবার। এই ২ দিনে কিন্তু গত ৫ দিনের অভাব পুষিয়ে যাবে বলেই মনে করছেন বিক্রেতারা। গত ৫ দিনে পেটি পেটি করে আনা বাজি যেমন পড়ে ধুলো খেয়েছে। শনিবার আকাশ পরিস্কার হওয়ায় প্রবল ভিড়ে তা খোলার ফুরসত পাচ্ছিলেন না বিক্রেতারা। মাঠ এখনও জলে ভরা। কিন্তু মানুষের উৎসাহে খামতি ছিলনা শনিবার। অনেক বিক্রেতার মতে, রবিবারও দরকার নেই। শনিবার যদি সারাদিন ভিড় টানা থেকে যায় তাহলেই মুনাফা যা ঘরে তোলার তোলা হয়ে যাবে।
শুধু টালা পার্ক বলেই নয়, বাজি বাজার বসেছে লেকটাউনেও। তবে এখানে বাজার একটাই এরিনায় পরপর স্টলে। বেশ সুসজ্জিত স্টল। এখানে বাজির দামও বেশ চড়া। বাজি বাজারের মত বিভিন্ন পাড়ার দোকানগুলিতেও বাজির দাম কিন্তু বেশ চড়া। দোকানে দোকানে এবার পসরাও কম। চাহিদা কী তবে কমছে? দোকানদারদের অনেকের মতে বাজির দাম এতটাই চড়া যে মানুষ বাজেটের মধ্যে নিজেকে ধরে রাখতে কম বাজি কিনছেন। বিশেষত দামি বাজিগুলির চাহিদা কমই। এত দাম দিয়ে বাজি পোড়ানো এড়িয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
এবার কিন্তু বাজির বাজার বেশ চড়া। অনেক বাজির দামই ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রঙিন ফুল হওয়া রকেট বিকোচ্ছে কমপক্ষে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা প্যাকেট। সাধারণ ফুলঝুরি ৮০ থেক ১০০ টাকা বান্ডিল। আর রঙিন ফুলঝুরি বিকোচ্ছে ১৫০ টাকা বান্ডিল দরে। চরকি, রংমশাল, তুবড়িও চড়া দামেই মিলছে। ব্যবসায়ীদের যুক্তি বাজির মশলার দাম এতটাই বেড়েছে যে তাঁদের দাম বাড়াতেই হয়েছে। সেল-এর দামও প্যাকেটে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে বেড়েছে। বরং কিছু রঙিন চুটপুট, সাপবাজি জাতীয় বাজির দামটা একই রয়েছে। তবে এসবের তেমন চাহিদা নেই।