কলকাতার ইতিহাসে জড়িয়ে গিয়েছে ফাটাকেষ্ট, সোমেন মিত্রর কালীপুজো
শরৎ তার শেষ লগ্নে এসে উপস্থিত। মণ্ডপ আলো করে দীপান্বিতার আগমন ইতিমধ্যেই আরম্ভ হয়ে গিয়েছে তিলোত্তমার বিখ্যাত বারোয়ারিগুলিতে।
শরৎ তার শেষ লগ্নে এসে উপস্থিত। মণ্ডপ আলো করে দীপান্বিতার আগমন ইতিমধ্যেই আরম্ভ হয়ে গিয়েছে তিলোত্তমার বিখ্যাত বারোয়ারিগুলিতে। এরকমই এক সন্ধ্যেয় পৌঁছনো গেল সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে। কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ‘ফাটাকেষ্ট’-র কালীপুজোর মণ্ডপে। ফাটাকেষ্ট, একটা ব্র্যান্ড। একটা মিথ। যা কলকাতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। আট থেকে আশি সবার কাছেই এ নামের পরিচিতি সমান। ফাটাকেষ্টর বিখ্যাত কালীপুজো তাঁর নামের মতই বিখ্যাত। যা দেখতে বহু মানুষ প্রতি বছর ভিড় জমান এখানে। এক সময়ে বলিউড থেকে তারকাদের ভিড় লেগে থাকত এ পুজোয়। হত জলসা। এখন জাঁকজমক সামান্য কমলেও, ফাটাকেষ্টর পুজো এখনও ফাটাকেষ্টর পুজোই রয়ে গেছে।
নব যুবক সংঘের অন্যতম সক্রিয় সদস্য ইমরান আলির সাথে আলাপ জমল। তিনি জানালেন কলকাতার অন্যতম পুরনো পুজোটি এবার ৬০ বছরে পা রাখল। চন্দননগরের আলোকসজ্জায় সজ্জিত পুজোটির এবারের থিম বেলুড় মঠ। সেভাবেই সেজে উঠছে মণ্ডপ। পুজো ছাড়াও রক্তদান শিবির ও বস্ত্রদানের মত বেশ কিছু সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নব যুবক সংঘ। প্রতিমার বিসর্জন আগামী ২২ অক্টোবর।
ফাটাকেষ্টর কালীপুজো থেকে সামান্য পথ হেঁটে আমহার্স্ট স্ট্রিট ও কেশব সেন স্ট্রিটের মুখে পৌঁছলেই সামনে আরও একটি প্যান্ডেল। কলকাতা তো বটেই, কলকাতার বাইরেও এ পুজোর সুনাম যথেষ্ট। এ পুজো চিরদিন কংগ্রেসের দাপুটে নেতা সোমেন মিত্রর পুজো নামেই খ্যাত। পোশাকি নাম আমহার্স্ট স্ট্রিট সার্বজনীন। প্রায় তিনতলা উঁচু বিশাল সাবেকি মাতৃপ্রতিমা এবং তার সাথে আলোর সাজ গোটা এলাকাটাকেই করে তুলেছে মোহময়ী। তদারকির ব্যস্ততম মুহুর্তেও খানিকটা সময় দিলেন অন্যতম উদ্যোক্তা এক ষাটোর্ধ মানুষ, এই পুজো কমিটির যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ নীলাঞ্জন মিত্র। জিএসটির ফলে সামগ্রিক খরচের পাল্লা খানিকটা ভারী হয়েছে বলে মেনে নিলেন নীলাঞ্জনবাবু।। তবে এ পুজো কলকাতার অন্যতম সেরা পুজোর একটি। তাই তার জাঁকজমকে তেমন খামতি নেই। বরং চারপাশ কালীপুজো উপলক্ষে বরাবরের মত এবারও সেজে উঠেছে কনের সাজে। প্রথা মেনে রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামীজির হাতেই এবারও উদ্বোধন হয়েছে পুজোর। পুজো উপলক্ষে রাস্তার চারপাশ জুড়ে বসেছে মেলা। আলোয় সেজে উঠেছে চারধার। পুজোর কদিন সন্ধের পর আমহার্স্ট স্ট্রিটে প্রতি বছর যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে।
মহানগরীর বিখ্যাত কালীপুজো দর্শনের পরিকল্পনা থাকলে এই ২টি পুজোর নাম অবশ্যই তালিকায় থাকবে। কালীপুজোর সুখ্যাতিতে অবশ্যই এগিয়ে নৈহাটি ও বারাসত। কিন্তু কলকাতার এই দুই পুজো কিন্তু তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যে নিজেদের একটা অন্য জায়গা ধরে রেখেছে।