সরু স্লিভলেস ব্লাউজ, সঙ্গে ছিপছিপে শরীরে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো সব্যসাচীর ‘আকাশ-তারা’ শাড়ি। নায়িকার উন্নীত কাঁধ ছুঁয়ে এলিয়ে পড়েছে মখমলে মেটালিক লুকের কালো শাড়ির খোলা আঁচল। গলায় চেপে বসা রোজ কাট হিরে, কলম্বিয়ান পান্না ও বসরাই মুক্তোখচিত গলাবন্ধ হার। সবমিলিয়ে চুঁইয়ে পড়ছে আভিজাত্যের নির্যাস। এটুকুতেই সম্পূর্ণা হয়ে ওঠা সম্ভব নয়। প্রয়োজন, চুলের নিখুঁত স্টাইলিংও। সেক্ষেত্রে বুঁফো হেয়ার স্টাইল একেবারে মানানসই। হাত খালি রাখা চলবে না। অতঃপর মহাকাশ ঘন আঁধারে রঙা বটুয়া উঠেছে এক হাতে। ৫০-৬০-এর দশকের ছবির জগতের স্বপ্ন সুন্দরী নায়িকারা হঠাৎ যেন চোখের সামনে এভাবেই ধরা দিলেন। আর এমনটা ঘটল অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতের হটকে পোশাক ভাবনা থেকে। বলা যায়, মধুবালা, নার্গিস, ওয়াহিদা রহমান, মমতাজ, হেমা মালিনী, শর্মিলা ঠাকুরেরা একপ্রকার কঙ্গনার হাত ধরে হেঁটে নিলেন রেড কার্পেট। ‘কুইন’, ‘তন্নু ওয়েডস মন্নু’ খ্যাত অভিনেত্রীকে এমন সাজে কবে শেষ দেখা গেছে তা মনে পড়া সম্ভব নয়। মনে করার দরকারও নেই। কারণ, এর আগে কখনোই কোনও ফ্যাশন পার্টিতে এমন ‘ব্ল্যাক এণ্ড হোয়াইট’ লুকে দেখা যায়নি ‘গ্যাংস্টার’ ছবির নায়িকাকে।
হয়তো সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন বছর ৩১-এর অভিনেত্রী। একসময়ে সিনেমা ছিল সাদা কালো, স্টিল ফোটো ছিল সাদা কালো। সেই ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইটের বিশাল সময় পেরিয়ে এখন সবই রঙিন, আধুনিক। কিন্তু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া মানে এই নয়, নিজের গৌরবময় অতীতকে ভুলে যাওয়া। বরং স্মৃতির পাতায় এক স্বর্ণোজ্জ্বল যুগকে মনে রাখতে গেলে তার প্রচার জরুরি। সেই প্রচারের কাজে কঙ্গনার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ভারত বিখ্যাত ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। এমনিতে বিরুষ্কার বিয়ের পর থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফ্যাশন মঞ্চ কাঁপাচ্ছেন এই বাঙালি ডিজাইনার। এবার তাঁর কাছে ছিল বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ। সুযোগটুকু হাতছাড়া করলেন না সব্যসাচী। বুধবার আন্তর্জাতিক অ্যালকোহল ব্র্যান্ড গ্রে গুজের অ্যাম্বাসাডর হিসেবে ৭১তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগদান করেন কঙ্গনা। সেখানে এক বঙ্গ সন্তানের সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় ভারতীয় অভিনেত্রীর রেট্রো লুক নজর কেড়েছে উৎসবের আয়োজকদের। একদম অন্য লুকে কঙ্গনা বাহবা কুড়িয়েছে কানে আমন্ত্রিত অতিথিদেরও।
(ছবি – সৌজন্যে – ইন্সটাগ্রাম)