মার্কিন মুলুকে কর্মরত ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার শ্রীনিবাস কুচিভোটলা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত অ্যাডাম পুরিন্টনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল মার্কিন আদালত। অর্থাৎ আগামী ৫০ বছর কারাগারেই কাটাতে হবে পুরিন্টনকে। এছাড়া পুরিন্টনকে ১৬৫ দিন করে ২ ধাপে হাজতবাস করতে হবে। ২ ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার সাজা হিসাবে এই শাস্তি তাকে দিয়েছে আদালত। পুরিন্টনের এখন বয়স ৫২ বছর। ফলে জীবদ্দশায় তার আর মুক্তি মিলবে না বলেই মনে করছেন সকলে। গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি কানসাস সিটির একটি বারে খুন হন শ্রীনিবাস। সেই ঘটনার কড়া ভাষায় নিন্দা করে তখন সদ্য ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প প্রশাসন। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীকে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দেয় ট্রাম্প সরকার। ধৃত পুরিন্টনের বিরুদ্ধে ফাস্ট ডিগ্রি মার্ডার চার্জ দিয়ে মামলা শুরু করে মার্কিন পুলিশ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস সিটির একটি বারে বসে গল্প করছিলেন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার শ্রীনিবাস কুচিভোটলা ও অলোক মাদাসানি। রাত গভীর হয়েছিল। আচমকাই বছর ৫১-র প্রাক্তন মার্কিন নৌসেনা কর্মী অ্যাডাম পুরিন্টন হাজির হয় সেই বারে। তারপর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই শ্রীনিবাসদের ‘জঙ্গি’ বলে সম্বোধন করে তাঁদের মার্কিন মুলুক থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। চালিয়ে দেয় গুলি। গুলিতে লুটিয়ে পড়েন ৩২ বছরের যুবক শ্রীনিবাস। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। অপর গুলিটি গিয়ে লাগে মাদাসানির গায়ে। গুরুতর আহত মাদাসানিকে লক্ষ্য করে আরও একটি গুলি চালাতে যাবে ঠিক সেই সময় মারমুখী পুরিন্টনকে আটকাতে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এক মার্কিন যুবক ইয়ান গ্রিলট। মাদাসানিকে ছেড়ে তার শেষ গুলিটি পুরিন্টন চালিয়ে দেয় গ্রিলটের দিকে। গ্রিলটের হাত ফুঁড়ে বুলেট ঢুকে যায় পাঁজরে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাদাসানি ও গ্রিলটকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাদাসানির স্ত্রী তখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। নিজে গুলি খেলেও এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বামীকে বাঁচাতে পেরে খুশি চেপে রাখতে পারেননি গ্রিলট। হাসপাতালের বেডে শুয়েই তা প্রকাশ করে ফেলেন তিনি। এদিকে অভিযুক্ত পুরিন্টনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুরু হয় তার বিরুদ্ধে মামলা। সেই মামলার রায় ঘোষণা হল শুক্রবার।