বৃহস্পতিবার ঘড়ির কাঁটায় তখন ভোর ৫টা ৩৫। প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে সমতল থেকে ১১ হাজার ৭৫৫ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কেদারনাথ মন্দিরের সামনে তখন বহু পুণ্যার্থীর ঢল। চারিদিক থেকে ভেসে আসছে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ। চলছে সনাতনি প্রথা মেনে পুজো। ওই ভোরেই কেদারনাথ মন্দিরে ফের বিগ্রহকে প্রতিষ্ঠা করেন পুরোহিতেরা। তারপর খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের দরজা। ওই ভোরেই তখন ভক্তরা জয়ধ্বনি দিচ্ছেন। প্রণাম করছেন। ৬ মাস বন্ধ থাকার পর ফের প্রথা মেনেই খুলে গেল কেদারনাথ মন্দিরের দরজা। এখন থেকে ৬ মাস কেদারনাথ মন্দিরের দরজা খোলা থাকবে মানুষের জন্য।
গাড়োয়াল হিমালয়ের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় পাহাড়ের ওপর অবস্থিত কেদারনাথ মন্দিরের দরজা খোলার পর অন্য ভক্তদের সঙ্গে পুজো দেন উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল বেবি রানি মৌর্য। এদিন কেদারনাথ মন্দিরকে সাজানো হয় ১০ কুইন্টাল ফুল দিয়ে। হৃষীকেশের একটি এনজিও বিনামূল্যে এই ফুল মন্দির কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে বলে জানান বদ্রীনাথ কেদারনাথ টেম্পল কমিটির চেয়ারম্যান। ফুলে ফুলে সাজানো মন্দির এদিন অপরূপ সাজে সেজে ওঠে।
কদিন আগেও কেদারনাথে অনেক বরফ জমে ছিল। সেসব বরফ কেটে সরিয়ে পুণ্যার্থীদের আসার ব্যবস্থা করা হয়। বরফে চাপা পড়ে কেদারনাথের আশপাশে রাত কাটানোর জন্য তৈরি কুঁড়েঘর ও তাঁবুর অনেকগুলিই নষ্ট হয়েছিল। সেগুলিও ঠিক করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। এবার রাতে ৩ হাজার মানুষের থাকার বন্দোবস্ত পাকা করেছে সরকার।
কেদারনাথের আশপাশে বরফে কেটে সরালেও মন্দিরের চারধার ঘিরে অন্য যেসব পাহাড়ের চূড়া রয়েছে, সেগুলি সবই এখনও মোটা বরফের চাদরে ঢাকা। মনে করা হয় ১ হাজার ২০০ বছর আগে আদি শঙ্করাচার্যের হাত ধরেই এই কেদারনাথ মন্দিরের প্রতিষ্ঠা হয়। মন্দাকিনী ও সরস্বতী নদীর ধারে তৈরি হয় কেদারনাথ মন্দির। গাড়োয়াল জুড়েই রয়েছে পঞ্চ কেদার বা শিবের পাঁচটি লিঙ্গ। যার অন্যতম হল কেদারনাথ। অন্য ৪টি হল তুঙ্গনাথ, রুদ্রনাথ, মধ্যমহেশ্বর ও কল্পেশ্বর। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা