৪ উইকেটে বিরাট কোহলির বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে আইপিএল অভিযান জয় দিয়ে শুরু করল কলকাতা। ৭ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেন শাহরুখের ছেলেরা। তাও টিম মালিকের উপস্থিতিতে। নতুন দল, কী করবে কিছু বোঝা যাচ্ছিল না। সেই অবস্থায় চাপ যে শাহরুখের ওপরও ছিলনা তেমন নয়। উত্তেজনায় একসময়ে তাঁকেই প্যাভিলিয়ন থেকে রিভিউ সিগনাল দেখাতে দেখা যায়। তবে এদিনের জয় সব সংশয়ে জল ঢেলে দিল। কেকেআরের নতুন দল যে জোলো হয়নি তা বুঝিয়ে দিলেন কার্তিকের ছেলেরা।
টস জিতে এদিন বিরাট বাহিনীকে ব্যাট করতে পাঠান কলকাতার অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। প্রথম ওভারেই বিনয় কুমারের বলে মারতে শুরু করেন তিনি। কুইন্টন ডি কক মাত্র ৪ রান করে ফিরলেও বিরাট নেমে ম্যাককালামের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। বিরাট এদিন তেমন একটা ছন্দে না থাকলেও ম্যাককালাম কিন্তু চার, ছয় চালিয়ে যান। কাজে লাগাতে থাকেন পাওয়ার প্লের ফিল্ডিং শর্তকে। ম্যাককালামকে নারিন ফেরানোর পর এবি ডেভিলিয়ার্স একই কাজ শুরু করেন। কেকেআর স্পিনাররা বেগ দেওয়ার চেষ্টা করলেও ডেভিলিয়ার্সকে আটকানো যায়নি। ৫টি ছক্কা ১টি চার মেরে দলকে শক্ত ভিতে দাঁড় করিয়ে দেন তিনি। যখন বিরাট ও ডেভিলিয়ার্স দুজনেই হাত খুলে মারছেন তখনই বল করতে আসেন নীতীশ রাণা। প্রথম বলে ছয় খেলেও পরের দুটো বলে কিন্তু ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তিনি। পরপর ২ বলে ডেভিলিয়ার্স ও কোহলিকে প্যাভিলিয়নে পাঠান রাণা। মনদীপ সিং ভাল ব্যাট করে বেঙ্গালুরুকে অনেকটা এগিয়ে দেন। বিশেষত শেষ ওভারে বিনয় কুমারের বলে ২টি ছক্কা ও ১টি চার মেরে বেঙ্গালুরুর রান ১৭৬-এ পৌঁছে দেন তিনি।
১৭৭ রান করলে জিতবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে ঘরের মাঠে শুরুতেই ক্রিস লিনের উইকেট হারায় কেকেআর। কিন্তু সুনীল নারিনের ব্যাট চলতে থাকে লাগামছাড়া গতিতে। মাত্র ১৭ বলে ৫০ রান পূর্ণ করেন তিনি। ৫টি ছক্কা ও ৪টি চারের ছবির মত ইনিংস বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মুখ কার্যত শুকনো করে দেয়। তবে গত আইপিএল পর্যন্ত কলকাতার বোলার হিসাবে খেলা উমেশ যাদবকে এনে বেঙ্গালুরু সুনীল নারিনকে ফেরায়। উমেশের পরের ওভারে ফেরেন উত্থাপ্পাও। এরপর ম্যাচের হাল ধরেন অধিনায়ক কার্তিক ও নীতীশ রাণা। এসময়ে বল ও রানের ফারাক তেমন কিছু ছিলনা। নীতীশ ফেরার পর রিঙ্কু সিং এসে শুরুতেই ভাল ব্যাটিংয়ের উদাহরণ খাড়া করলেও একটি বলে সামান্য খোঁচায় ধরা পড়ে যান উইকেটরক্ষকের হাতে। মাঠে নামেন রাসেল। আর রাসেল মানেই মারকাটারি ইনিংস। এদিনও তাই হল। ধরে খেললেও ম্যাচ বার হত। কিন্তু রাসেল তাঁর স্বভাবসিদ্ধ মারমুখী মেজাজেই ধরা দেন। ২টো চার ও ১টা ছক্কা হাঁকিয়ে রাসেল যখন ফেরেন তখনও ম্যাচ হাতের মধ্যেই। নামেন বিনয় কুমার। কিন্তু শুরুতেই ক্যাচ দিয়ে বসেন। সেই ক্যাচ আবার ফেলেও দেন ওয়াশিংটন সুন্দর। এরপর খেলার ফলাফল ছিল সময়ের অপেক্ষা। হলও তাই। ৭ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় কলকাতা। কিন্তু এতকিছুর মধ্যেও একটা জিনিস ছিল চোখে পড়ার মতন। তা হল অধিনায়ক কার্তিকের দায়িত্বপূর্ণ ব্যাটিং। তিনি জানতেন উল্টোদিক থেকে আউট হতেই থাকলে তাঁকেই ধরতে হবে হাল। আবার রানের গতিও বজায় রাখতে হবে। তাঁর ২৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংস ও শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা অবশ্যই কলকাতার সমর্থকদের নিশ্চিন্ত করল তাঁদের ক্যাপ্টেন নিয়ে। এদিনের ম্যাচে প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ হন সুনীল নারিন। কলকাতার পরের খেলা আগামী মঙ্গলবার সন্ধেয় চেন্নাইয়ের সঙ্গে। চেন্নাইয়ের মাঠে।