দিনের ব্যস্ত সময়। অফিস টাইম। মেট্রোয় তখন ঠাসা ভিড়। এমন সময়ে আচমকা থমকে গেল ট্রেন। অন্ধকার। ঠাসা ভিড়ে কোনও হাওয়া চলাচল করছেনা। কী হল! যাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল আতঙ্ক। মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও ঘোষণা নেই। অথচ টানেলের মধ্যে স্তব্ধ হয়ে গেছে মেট্রোর চাকা। এদিকে আতঙ্কের সঙ্গে মেশে হাওয়ার অপ্রতুলতা। ফলে ক্রমশ বাড়তে থাকে শ্বাসকষ্ট। এমনই এক ভয়ংকর দমবন্ধ করা পরিস্থিতির মধ্যে মেট্রো দাঁড়িয়ে থাকে প্রায় ১৫ মিনিট। ৯টা ৫৩ মিনিট থেকে ১০টা ৮ মিনিট পর্যন্ত এমন চলার পর অবশেষে বিদ্যুৎ ফেরে। এগোয় ট্রেন। শ্বাস নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন মেট্রো যাত্রীরা। একটা নয়, এমন বেশ কয়েকটা গাড়ি টানেলের বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়ে। যাত্রীদের অভিযোগ একে তাঁরা ভালকরে শ্বাসটুকু নিতে পারছিলেন না। আতঙ্কে প্রাণ বার হওয়ার যোগাড় হয়েছিল। কিন্তু মেট্রোর তরফে প্রথম ১০ মিনিটে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে মেট্রোর তরফে দাবি করা হয়েছে, শ্যামবাজারের একটি ট্রেনের ৩টি কামরা স্টেশনে প্রবেশ করেছিল। বাকিটা ছিল সুড়ঙ্গে। অন্য গাড়িগুলি বিভিন্ন স্টেশনেই অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ছিল। কোনও গাড়ি দুটি স্টেশনের মাঝে সুড়ঙ্গে আটকে পড়েনি। এদিন সকালে সিইএসসির বজবজ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭০০ মেগাওয়াটের ৩টি ইউনিট আচমকা বসে যায়। ফলে বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যাহত হয়। লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে কলকাতার উত্তর ও মধ্যভাগ। প্রায় সর্বত্রই কারেন্ট চলে যায়। কিছুক্ষণ পরেই মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। সেই অবস্থায় এমন অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়েন। পরে পুরুলিয়া সাব-স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সাড়ে দশটার পর অনেক জায়গায় ফের বিদ্যুৎ ফিরে আসে। এদিন মেট্রোয় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সময়ও বেশ কয়েকজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেট্রোর অন্ধকার সুড়ঙ্গে আটকে পড়ে। এদিকে এমন অস্বাভাবিক কাণ্ডকে নিছক দুর্ঘটনা হিসাবে মেনে নিতে পারছে না নবান্ন। বেছে বেছে মাধ্যমিকের সময় এমন ঘটনার পিছনে কোনও অন্তর্ঘাত লুকিয়ে আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে এদিন নবান্নে বিদ্যুৎ দফতর ও পুলিশের বড়কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।