বছর ৬-৭ আগের কথা। ফাতিমা সর্দারের সঙ্গে বন্ধু হয়েই দিল্লি গিয়েছিল জলিল শেখ। সেখানে তারা লিভ টুগেদার করে দিন কাটাচ্ছিল। কিছুদিন পর দিল্লিতে হাজির হন ফাতিমার পরিবারের লোকজন। প্রেম করার পর লিভ টুগেদারে তাঁরা রাজি ছিলেন না। বরং চাইছিলেন বিয়ে করুক দুজনে। পরিবারের কথা শুনে বিয়েও করে তারা। পরে তাদের একটি সন্তানও হয়। পুলিশ জানাচ্ছে, কদিন আগে তারা এক মহিলার দেহ উদ্ধার করে দিল্লির সাগরপুর এলাকা থেকে। দেহটি একটি প্যাকেটে বন্দি অবস্থায় ছিল। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু ওই মহিলার পরিচয় পুলিশ কিছুতেই উদ্ধার করতে পারছিল না।
দিল্লি পুলিশ এরপর ওই মহিলার পরিচয় জানতে তাঁর ছবি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিতে ছড়িয়ে দিতে থাকে। পুলিশের গ্রুপেও দেওয়া হয় ছবি। অবশেষে একজন পুলিশকে ফোন করেন। জানান তিনি ফাতিমা সর্দারের পরিবারের লোক। আর ছবিটা ফাতিমা সর্দারের। তিনি আরও জানান যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মেয়ে ফাতিমা সর্দারের সঙ্গে জলিল শেখের বিয়ে হয়েছিল। তারা দিল্লিতে থাকত। এটা জানার পর পুলিশ দিল্লিতে ফাতিমা সর্দারের বাড়িতে গেলে দেখে সেখানে তালা ঝুলছে। তারপরই পুলিশের একটি দল কলকাতায় হাজির হয়।
রাজ্য পুলিশের সহযোগিতায় তারা জানতে পারে জলিল শেখ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এসে রয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাকে ধরতে গেলে সে তার আগেই চম্পট দেয়। এরপর বেশ কয়েকদিন চোর পুলিশ খেলা চলার পর অবশেষে গত ২৮ অগাস্ট জলিল শেখকে বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। জলিল পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সেই তার স্ত্রী ফাতিমাকে হত্যা করেছে। সে এও স্বীকার করেছে যে তার ২ স্ত্রী। একজন রয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। আর দিল্লিতে ছিলেন ফাতিমা।
ফাতিমাকে সে পতিতাবৃত্তিতে নামাতে চাইছিল বলেও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে জলিল। কিন্তু ফাতিমা তাতে রাজি ছিলেন না। ফলে দুজনের প্রায়ই ঝগড়া হত। ফাতিমা পতিতাবৃত্তিতে শেষ পর্যন্ত রাজি না হওয়ায় রাগের মাথায় জলিল তাকে একটি কাপড় গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তার দেহ ফেলে দেয়।