Kolkata

বউবাজারের ঘরছাড়া বৃদ্ধার মৃত্যু, দেহ এল রাস্তায়, পাড়ায় ঢুকল না

ওই বাড়িই ছিল তাঁর প্রাণ। বৃদ্ধ বয়সে জীবনের সবটুকু স্মৃতি নিয়ে ওই বাড়িটার ওপর ছিল বড় মায়া। কিন্তু সেই বাড়ি ছেড়েই রাতারাতি তাঁদের বেরিয়ে যেতে হয়। যেমন করতে হয়েছে সেখানকার অনেক পরিবারকে। স্যাকরা পাড়া লেনের ভিটেমাটি ছেড়ে স্থান হয়েছিল একটি হোটেলে। কিন্তু সেই হোটেলের পরিবেশ তাঁর একেবারেই ভাল লাগছিলনা। মন পড়েছিল বাড়িতে। তাতেই ক্রমে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি এই শোক সহ্য করতে না পেরে এবং হোটেলের পরিবেশ একদম পছন্দ না হওয়ায় মনের মধ্যে হওয়া প্রবল কষ্ট ওই বৃদ্ধার মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বাড়ি ছাড়ার শোক সহ্য করতে পারেননি তিনি। চেয়েছিলেন মৃত্যুর পর একবার অন্তত তাঁকে যেন বাড়ি আনা হয়। সেইমত বউবাজার স্ট্রিটের ওপর নিয়ে আসা হয় তাঁর দেহ। বুধবার সকালে সেই পর্যন্ত দেহ এলেও বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি।


মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, গত ৭ সেপ্টেম্বর বৃদ্ধার অসুস্থতার খবর পেয়ে রাতেই তাঁকে হোটেলে দেখতে যান চিকিৎসকেরা। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। পরদিন সকালে বৃদ্ধাকে তাঁদের ঠিক করা হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়। সেখানেই ১০ সেপ্টেম্বর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। একেই চোখের জল বাধ মানছে না বউবাজারের গৃহহীন মানুষগুলোর। তারমধ্যে এই মৃত্যু একাধারে তাঁদের আরও শোকাহত করেছে। আরও ক্ষুব্ধ করেছে। তাঁদের প্রশ্ন এজন্য দায়ী কে? তাঁরা কেনই বা এই অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করবেন?

প্রসঙ্গত বুধবার ভোরের দিকে ফের স্যাকরা পাড়া লেনের একটি বাড়ির কিছুটা ভেঙে পড়েছে। এদিকে মাটির তলায় কাদা জলের স্রোত ঠেকাতে মেট্রো রেল পাল্টা জল দিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে। সেইমত গত মঙ্গলবার রাত থেকেই জল ঢোকানো শুরু হয়েছে। এখন দেখার তাতে কতটা কাজের কাজ হয়। এদিকে অনেকগুলো দিন বাড়ি ছেড়ে বাইরে থাকা বউবাজারের মানুষজনের প্রশ্ন তাঁরা কবে ফিরবেন তাঁদের ভিটেতে? এ প্রশ্ন যাঁদের বাড়ি এখনও চিড় ধরা ছাড়া অক্ষত আছে তাঁদের। আর যাঁদের বাড়ি ভেঙে নেমে গেছে তাঁদের প্রশ্ন বাড়ি ফের কবে তৈরি হবে? ততদিন কী হোটেলেই থাকতে হবে? ক্ষোভ আর হতাশা ক্রমশ গ্রাস করছে বউবাজারের বাসিন্দাদের।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button