শহিদ মিনার থেকে মহাজাতি সদন পর্যন্ত ছাত্রদের মিছিল। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে মিছিল। সেই মিছিল যাবে সেন্ট্রাল এভিনিউ দিয়ে। তারমানে মহাজাতি সদন পৌঁছতে মিছিল এগোবে রাজ্য বিজেপির সদর দফতরের সামনে দিয়ে। এটা বিলক্ষণ জানত পুলিশ। ফলে একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। যে কোনও মুহুর্তে ছাত্রদের বিক্ষোভ আছড়ে পড়তে পারে বিজেপি অফিসেও। তাই আগেভাগেই ব্যবস্থা নিয়েছিল পুলিশ।
বিজেপি অফিসের সামনে মুরলীধর সেন লেন ও সেন্ট্রাল এভিনিউয়ের মুখে একটা বিশাল ট্যুরিস্ট বাস দাঁড়ি করিয়ে দিয়েছিল তারা। সেইসঙ্গে ওই বাসের সামনে ও পিছনেও বেসরকারি রুটের বাস ও মিনিবাস দাঁড় করিয়ে রেখেছিল পুলিশ। অদ্ভুত এক পদ্ধতিতে একটি বাসের ব্যারিকেড তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিল। যাতে কোনওভাবে ছাত্ররা বিজেপি অফিসের গলিটাও দেখতে না পায়।
মিছিল শহিদ মিনার থেকে বার হয়ে এগোতে থাকে। যাতে অংশ নেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, এসআরএফটিআই সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা। অন্যদিকে বিজেপি অফিসের সামনে বাস ছাড়া পুলিশের ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড তৈরি রাখা হয়েছিল। তার পিছনে দাঁড়িয়েছিলেন বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। ছাত্রছাত্রীদের মিছিল সন্ধের মুখে এসে পৌঁছয় সেন্ট্রাল এভিনিউ ধরে বিজেপি অফিসের গলির সামনে। ছাত্র ও বিজেপি অফিসের মাঝে তখন রাস্তার বুলেভার্ড, বাঁশের বেড়া, পুলিশের পরপর স্তর, বাস, তার পিছনেও পুলিশ।
বিজেপি অফিসের কাছে পৌঁছে বেশ কিছু ছাত্র জোর করে বুলেভার্ড টপকে বিজেপি অফিসের দিকে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। পুলিশ তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করে। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তারমধ্যেই বুলেভার্ড লাগোয়া বাঁশের বেড়া ভেঙে দেন ছাত্ররা। বুলেভার্ডের ওপর চড়ে তা টপকানোরও চেষ্টা করেন। বেশ কিছুক্ষণ এমন চলার পর ছাত্রদেরই একাংশ বিজেপি অফিসে যেতে চেষ্টা করা ছাত্রদের ঠেলে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। পুলিশও ধাক্কা দিয়ে ছাত্রদের মিছিলের স্রোতে মিশিয়ে দেয়।
রাস্তায় যখন ছাত্ররা বিজেপি অফিসের দিকে এগোনোর চেষ্টা করছেন তখন বিজেপি অফিসের সামনে পুলিশি ব্যারিকেডের পিছনে দাঁড়িয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরাও পাল্টা স্লোগান দিচ্ছিলেন। মিছিল এরপর অবশ্য শান্তিতেই সামনের দিকে এগোয়। সন্ধের মুখে এই মিছিলের জেরে অবশ্য সাধারণ মানুষ চরম সমস্যার শিকার হন। প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়। এদিন কংগ্রেসের তরফেও রাজভবন অভিযান হয়। এছাড়াও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক জায়গায় ছোটখাটো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।