এনআরসি, সিএএ, এনপিআর-এর বিরুদ্ধে বাম ও কংগ্রেসের ডাকা বন্ধে বুধবার সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উত্তেজনা ছড়ায়। অনেক স্টেশনে ট্রেন অবরোধ হয়। অনেক জায়গায় বাসে ভাঙচুর হয়। অটো ভাঙচুর হয়। জোর করে যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়ে দেন বন্ধ সমর্থকেরা। দোকানপাট জোর করে খোলানো হয়। প্রতিরোধও হয়েছে কোথাও কোথাও। কিছু ক্ষেত্রে পরে তৃণমূল গিয়ে আবার বন্ধ দোকান খুলিয়ে দেয়। সব মিলিয়ে সকাল থেকেই বন্ধকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যের কোণায় কোণায়। কলকাতায় যার প্রভাব পড়েছে একটু দেরিতে। তবে সকাল কিছুটা গড়াতে যে ছবি কলকাতায় উঠে এসেছে তাও কিন্তু সাধারণ মানুষের অস্বস্তির কারণ হয়েছে। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
কলকাতায় এদিন বন্ধের সমর্থনে যাদবপুরে তুলকালাম শুরু হয় বেলা ১০টার পর থেকে। যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ডের কাছে সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পথ অবরোধ শুরু করে বামেরা। এই সময় পুলিশ অবরোধ সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বেশ কিছু বাসে ভাঙচুর চালান বন্ধ সমর্থনকারীরা। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সুজন চক্রবর্তী সহ বেশ কয়েকজন বাম কর্মী সমর্থক গ্রেফতার হন। রাস্তার ওপর কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর হয়। গার্ড রেল রাস্তায় ফেলে বন্ধ সফল করার চেষ্টা হয়। আশপাশের দোকানপাট আতঙ্কে বন্ধ হয়ে যায়। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে লাঠিচার্জও করতে হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা এই অচলাবস্থা চলার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সল্টলেকের করুণাময়ী মোড়ের কাছে পথ অবরোধের চেষ্টা করেন বামেরা। সেই অবরোধ অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেয়নি পুলিশ। দ্রুত অবরোধ তুলে দেওয়া হয়। বেহালায় এদিন বামেদের বন্ধের সমর্থনে মিছিল ও তৃণমূলের বন্ধ বিরোধী মিছিল মুখোমুখি হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ অবশ্য অবস্থা দ্রুত আয়ত্তে নেয়। নাহলে আরও পরিস্থিতি জটিল হতেই পারত। কলেজ স্ট্রিটে এদিন সকালে বন্ধের সমর্থনে পথে নামেন ডিএসও কর্মীরা। শ্যামবাজার মোড় দুপুর ১২টা নাগাদ অবরোধ করেন বাম সমর্থকেরা। সেখানে নেতাজি মূর্তির পাদদেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুতুলও দাহ করা হয়। একইভাবে ১২টা ১০ নাগাদ রাজাবাজারে পথ অবরোধ হয়। কুশপুতুল পোড়ানো হয়। অবশ্য অবরোধ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তবে যাত্রী হয়রানি হয়েছে।
বিটি রোডের চিড়িয়া মোড়ে এদিন কিছুটা সময় অবরোধ হয়। বামেদের একটি মিছিল বেলা ১০টা নাগাদ বিটি রোডের ডানলপমুখী রাস্তা দিয়ে এগোলে প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক অফিস যাত্রীকেই হেঁটে এগোতে হয়। এছাড়া আগরপাড়ার কাছেও অবরোধ হয়। তবে বেলা বাড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। এদিকে দুপুরের দিকে রাসবিহারীতে বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ধর্মঘটীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিও হয়।