Kolkata

হাতে টাকা নিয়ে অভিনব প্রতিবাদে মহিলারা

হাতে নোট। মুখে প্রতিবাদ। পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। সেইসঙ্গে কটাক্ষ। তাঁরাও তৈরি পুলিশকে ঘুষ দিতে। তাই হাতে টাকা নিয়ে তাঁদের প্রতিবাদ। ট্যাংরার স্থানীয় মহিলাদের এমনই এক বিক্ষোভ কিন্তু গোটা শহরের নজর কাড়ল বৃহস্পতিবার। তাঁদের দাবি, ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডের এক গৃহবধূকে যেভাবে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়, তা পুলিশ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ ঘুষ নিয়ে বিষয়টি গাড়ি চাপার ঘটনা বলে চালাতে চাইছে।

পুলিশ অবশ্য অন্য কথা বলছে। পুলিশের দাবি তারা ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সিসিটিভি থেকে পাওয়া ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেছে তারা। তাতে কোথাও কোনও মহিলাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রমাণ নেই। এই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে ওই অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও তার সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদেও তারা হিট এন্ড রান-এর ঘটনা স্বীকার করলেও মহিলাকে টেনে তোলার চেষ্টার কথা স্বীকার করেনি। পুলিশ এও জানিয়েছে, রাতে তাদের কাছে অভিযোগ দায়েরের সময় দুর্ঘটনার কথাই বলা হয়েছিল। মহিলার হাত ধরে টেনে তোলার চেষ্টার কথা বলা হয়নি। এমনকি পুলিশ সাফ জানিয়েছে যদি এটা পুরোপুরি প্রমাণ হয় যে ওই মহিলা পুরোটাই গল্প সাজিয়েছেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও মহিলার পরিবারের সাফ দাবি, পুলিশ পুরো ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।


কী ঘটেছিল ওইদিন রাতে? ওই মহিলা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার রাত প্রায় সাড়ে ১১টা। আত্মীয়ের বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান সেরে হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন ওই গৃহবধূ, তাঁর মেয়ে, তাঁর শ্বশুর ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। কাছেই বাড়ি। তাই হেঁটেই ফিরছিলেন তাঁরা। গোবিন্দ খটিক রোডে আচমকাই তাঁদের পাশে এসে হাজির হয় একটি অ্যাম্বুলেন্স। অ্যাম্বুলেন্সটি ওই গৃহবধূর পাশে এসে আস্তে হয়ে যায়। গৃহবধূ শুনতে পান গাড়িতে থাকা চালক তার পাশে বসে থাকা যুবককে বলছে তাঁকে টেনে গাড়িতে তুলে নিতে। এ কথা শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই মহিলা। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি বুঝতে পারেন তাঁর হাতে একটা সজোরে টান পড়েছে।

ওই মহিলাকে টেনে গাড়িতে তোলার চেষ্টা চলতে থাকে। মহিলাও বাঁচার জন্য চেঁচাতে থাকেন। এই অবস্থায় দ্রুত ওই দুষ্কৃতিদের গাড়ির সামনে পথ আটকে দাঁড়ান গৃহবধূর শ্বশুরমশাই। অন্যরাও এগোন বাঁচাতে। বেগতিক বুঝে গাড়ির সামনে ওই বৃদ্ধ থাকা সত্ত্বেও মহিলাকে টানতে টানতে গাড়ি চালিয়ে দেয় দুষ্কৃতিরা। ধাক্কা খেয়ে গাড়ির চাকায় জড়িয়ে যান শ্বশুরমশাই। তাঁকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে গাড়ি। সেই টানে তাঁর পরনের পোশাক পর্যন্ত ছিঁড়ে বেরিয়ে যায়।


এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, যখন ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হচ্ছে তখন তাঁর রক্তাক্ত দেহে পোশাক অবশিষ্ট নেই। তাঁকে দ্রুত নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বেগতিক বুঝে সেখান থেকে চম্পট দেয় ২ দুষ্কৃতি। মহিলাকে নিয়ে যেতে পারেনি তারা। বলা ভাল শ্বশুরমশাই জীবন দিয়ে রক্ষা করে যান বউমাকে। পুলিশ এরপর তদন্ত শুরু করে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button