মেঝেতে লেখা ‘আমরা ৩ জনই মৃত’, ঘরে পড়ে ৩টি নিথর দেহ
এক পরিবারের ৩ জন বাবা, মা ও ছেলেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করল ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ। ঘরের মেঝেতে লেখা আমরা ৩ জনই মৃত।
কলকাতা : ঘরের মেঝেতে লেখা সুইসাইড নোট, ‘আমরা ৩ জনই মৃত’। কালো মেঝেতে সাদা চক দিয়ে এটুকুই লেখা রয়েছে। তার পাশেই এক ৮০ বছরের বৃদ্ধ মেঝেতে চিত হয়ে পড়ে আছেন। পাশে খাটের ওপর রয়েছে এক ৭০ বছরের মহিলার নিথর দেহ। আর রয়েছে বিশেষভাবে সক্ষম এক বছর ৫০-এর ব্যক্তির দেহ। ঘর থেকে একটি বাটি উদ্ধার হয়েছে। যাতে লেখা ‘সাবধান বিষ’। বাবা, মা ও ছেলের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর পুলিশের প্রাথমিক অনুমান পুরো পরিবারই আত্মহত্যা করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরপুকুরের সত্যনারায়ণ পল্লীতে। মৃতরা হলেন, ৮০ বছরের বৃদ্ধ গোবিন্দ কর্মকার, ৭০ বছরের তাঁর স্ত্রী রুনু কর্মকার ও তাঁদের বিশেষভাবে সক্ষম ছেলে বছর ৫০-এর দেবাশিস কর্মকার। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার পর পুলিশের অনুমান, আর্থিক অনটন সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় পরিবার। স্থানীরা জানাচ্ছেন, ছেলে দেবাশিস ছোট থেকেই বিশেষভাবে সক্ষম। স্ত্রী রুনু কর্মকারও সম্প্রতি পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী হন। তারপর থেকে বৃদ্ধ গোবিন্দবাবু দিশেহারা হয়ে পড়েন। আর্থিক অনটনও ক্রমশ সংসারে ছাপ ফেলতে থাকে।
গত রবিবার গোবিন্দবাবু বাজারে বেরিয়ে রাস্তায় পড়ে যান। তাঁকে অনেক কষ্টে একটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। কিন্তু জ্বর থাকায় গোবিন্দবাবুকে ভর্তি নেয়নি হাসপাতাল। এমনকি স্থানীয়দের অভিযোগ চিকিৎসক পর্যন্ত দেখতে চাননি। পরে কোনও হাসপাতালে জায়গা না হওয়ায় ফের গোবিন্দবাবুকে রাতে বাড়িতেই নামিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের অনুমান এতটা মানসিক চাপ সহ্য করতে পারছিলেননা ৮০ বছরের ওই বৃদ্ধ। হয়তো সেখান থেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় পরিবার। তদন্ত চলছে।