জমজমাট পুজোর বাজারে বাড়ছে সংক্রমণের চিন্তা
পুজোর আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন বাকি। পুজোর আগে বাকি ২টি রবিবার। তার প্রথমটিতে নজর কাড়ল পুজোর বাজারের ভিড়।
কলকাতা : ক্যালেন্ডার পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ার কথা বললেও বাস্তব বলছে করোনার কারণে পুজো এবার অনেকটাই ম্লান। তবে সেজন্য পুজোর বাজার কিন্তু খুব একটা থেমে নেই।
পুজোর বাজার সেপ্টেম্বরেও তেমন একটা না দেখা গেলেও অক্টোবর পড়তে কিন্তু বাজার জমে উঠেছে। আর শনি বা রবিবার হলে তো কথাই নেই।
এরপর আর একটা রবিবার হাতে। তার আগের রবিবারটা তাই পুরোদস্তুর ব্যবহার করে নিলেন অনেকে। পুজোর বাজারে বেরিয়ে পড়লেন। ফলে ভিড়ে ভিড় উত্তর থেকে দক্ষিণ।
সে শ্যামবাজার হাতিবাগান হোক বা ধর্মতলা বা গড়িয়াহাট, ভিড়ের চেহারা কিন্তু একই। মানুষ রবিবার কেনাকাটা করলেন গুছিয়ে। শপিং মলে বা দোকানে ঘুরে ঘুরে পছন্দও করলেন।
মুখে মাস্ক দেখা গেল আবার দেখা গেলও না। বিক্রেতাদের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। থাকলেও তা থুতনির কাছে নামানো। জিজ্ঞেস করলে জানাচ্ছেন কথা বলায় সমস্যা হচ্ছে তাই মুখের নিচে মাস্ক।
ক্রেতারাও একইভাবে মুখে মাস্ক পড়ছেন নানা ভাবে। কারও নাকটা খোলা। কারও মাস্ক বারবার নিচে নেমে যাচ্ছে। কারও মাস্কই নেই। কেউ বলছেন মাস্ক আছে, তবে ব্যাগে। বেশিক্ষণ টানা পড়তে অসুবিধা হচ্ছে।
তবে কেনাকাটা চলছে। পছন্দ করে সময় দিয়ে ভিড় ঠেলে ঘুরে জিনিস কিনছেন অনেকে। সেই চিত্রই ধরা পড়েছে রবিবার।
করোনাকে হয় কেউ আর তোয়াক্কা করছেন না, নয়তো হলে দেখা যাবে প্রবণতা। নাহলে এতটা ঝুঁকি কেবল কেনাকাটার জন্য! করোনা পরিস্থিতি একটু স্তিমিত হলেও তো কেনাকাটা করা যেত! তাহলে এত তাড়াহুড়ো কেন!
পুজোর বাজারই কিন্তু পুজোর দিনগুলোয় ঠাকুর দেখার ভিড়ের ইঙ্গিত স্পষ্ট করছে। আর সেই ভিড় হলে পুলিশ বা স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে সত্যিই কী রোখা সম্ভব?
মানুষকে কী সত্যিই বোঝানো সম্ভব হবে তাঁরা এই আনন্দটুকু করতে গিয়ে কত বড় ঝুঁকি নিচ্ছেন? নাকি যেসব গাইডলাইন দেওয়া হচ্ছে তা সত্যিই বাস্তবে সকলকে দিয়ে মানানো সম্ভব হবে?
কেরলে ওনাম উৎসবের পর সেখানে হুহু করে বাড়ছে সংক্রমণ। বাস্তবের এই কেস স্টাডি উদাহরণ হিসাবে সামনে এসেছে। তারপরও কী দুর্গাপুজো ঘিরে এই উন্মাদনা হতে পারে?
অনেকেই হয়তো দীর্ঘদিন করোনার কারণে ঘরে বন্দি থেকে বা অন্যত্র কোথাও না যেতে পেরে দুর্গাপুজোটুকু উপভোগ করতে চাইছেন। অথবা প্রতি বছরের অভ্যাস ফেলে দিতে পারছেন না। কিন্তু তার জন্য এত বড় ঝুঁকি নেওয়াটা কী ঠিক হচ্ছে?
এখন কিন্তু রাজ্যে সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী যাত্রা শুরু করে দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করছেন পুজোর পর রাজ্যের করোনা মানচিত্র চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে অচিরেই।