খুলে গেল মাঝেরহাট সেতু, দেরির জন্য কেন্দ্রকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর
অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান হল। খুলে গেল মাঝেরহাট সেতু। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ভেঙে পড়ে সেতুটির একটা অংশ। তারপর তা পুরো ভেঙে নতুন করে গড়া হল।
কলকাতা : ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। বিকেল বেলা একটা খবরে গোটা রাজ্যবাসী স্তম্ভিত হয়ে যান। মাঝেরহাট সেতু মাঝখান থেকে নিচে নেমে গেছে। মুখ থুবড়ে রয়েছে একটি মিনিবাস সহ অনেক গাড়ি।
হৈহৈ পড়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী বাইরে ছিলেন। তিনি দ্রুত হাজির হন কলকাতায়। যান পরিস্থিতি পরিদর্শনে। তারপর স্থির হয় পুরো ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
ব্রিজ নির্মাণের কাজও শুরু হয়। তলা দিয়ে গেছে রেল লাইন। তাই রেলের সঙ্গেও কথাবার্তার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে দরকারি ছাড়পত্র নেওয়া হয়।
মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ায় বেহালার বাসিন্দারা চরম হয়রানির শিকার হন। অবশেষে ২ বছর ৩ মাস পর বৃহস্পতিবার খুলে গেল নতুন মাঝেরহাট ব্রিজ। যার নামকরণ হয়েছে জয় হিন্দ সেতু।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সেতুটি কেবল দিয়ে ধরে রাখা হয়েছে। ৮৪টি মোটা কেবল ব্যবহার হয়েছে এই সেতুকে ধরে রাখতে। কেবলগুলি আনা হয়েছে সুইৎজারল্যান্ড থেকে। এমন ভাবে কেবল দিয়ে ব্রিজ ধরে রাখা কলকাতার মধ্যে এই প্রথম।
সেতুটি আগের চেয়ে চওড়া হয়েছে। ১৬ মিটার চওড়া হয়েছে নতুন ব্রিজটি। পুরো ব্রিজ ৬৩৬ মিটারের। ৪ লেনের রাস্তা তৈরি হয়েছে ব্রিজে। যাওয়া ও আসার পথ আলাদা। মাঝে ডিভাইডার রয়েছে।
সেতুর মাঝামাঝি পৌঁছলে সেখানে কেবল দিয়ে ব্রিজটি ধরে রাখা হয়েছে। পরপর কেবল গেছে পাইপের মধ্যে দিয়ে। জানা গেছে এই সেতুটি আগের সেতুর চেয়ে বেশি ভার বহনে সক্ষম। এছাড়াও রয়েছে বিশেষ সেন্সর।
এই ব্রিজের পক্ষে বেশি ভারী গাড়ি এই ব্রিজে উঠলেই সেই খবর পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে। তাঁদের মোবাইলে খবর যাবে। তাতে তাঁরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। সেতু জুড়ে থাকছে নজরদারির জন্য ক্যামেরাও।
ব্রিজের উদ্বোধন করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী রেলের দিকে আঙুল তোলেন। রেলের টালবাহানাতেই ৯ মাস দেরি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে পুরো দেরির জন্য আসলে কেন্দ্রকে দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পুরো ব্রিজ ঘুরে দেখেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম প্রমুখ।