Kolkata

জলের দোলার সঙ্গে উল্টোবে বইয়ের পাতা, শহরে অভিনব উদ্যোগ

বইপড়তে ভুলতে বসা ক্ষুদেদের জন্য অভিনব উদ্যোগের আয়োজন হল শহরে। যেখানে জলের দোলায় দুলবে শরীর। আর মন ভাল করা সৌন্দর্যের সঙ্গে উল্টোবে বইয়ের পাতা।

কলকাতা : ইন্টারনেট সর্বস্ব যুগে মোবাইলের প্রতি অমোঘ আকর্ষণ শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের অন্যান্য আগ্রহের বস্তুগুলি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। তৎক্ষণাৎ চাই এই মনোভাব তাদের ধৈর্য কমিয়ে দিচ্ছে। স্ক্রিনের ওপর আঙ্গুলের ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুলে যাচ্ছে হাজার বিনোদনের দ্বার। নানারকম বিনোদনের হাতছানিতে বইপড়ার মত ভালো অভ্যাসগুলি ক্রমশ কমে যাচ্ছে তাদের জীবনে থেকে।

তাই বইপড়ার অভিজ্ঞতাকে ছোটদের কাছে আকর্ষণীয় করার উদ্দেশ্যে রাজ্য পরিবহণ নিগম ও এপিজে আনন্দ চিলড্রেনস লাইব্রেরির উদ্যোগে চালু হতে চলেছে ছোটদের জন্য এক অভিনব গ্রন্থাগার, দ্যা কলকাতা ইয়ং রিডার্স বোট লাইব্রেরি।


ভাসমান এই লাইব্রেরির একটি বিশেষত্ব রয়েছে। হুগলি নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পড়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। জলের ওপর ভাসতে ভাসতে হাতে পছন্দের বই নিয়ে পড়ার সুযোগ অন্য আকর্ষণের হাতছানি তৈরি করেছে ছোটদের সামনে।

ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ভাসমান গ্রন্থাগারের সূচনা করেন রাজ্য পরিবহণ নিগম-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনবীর সিং কাপুর ও এপিজে সুরেন্দ্র গ্রুপের ডিরেক্টর প্রীতি পল।


গ্রন্থাগারটি সাজানো থাকবে ছোটদের সুন্দর শিল্পকর্মে। বাচ্চাদের পছন্দসই বিভিন্ন রকমের ও বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বই শোভা পাবে গ্রন্থাগারের তাকগুলিতে।

অক্সফোর্ড বুকস্টোরস বিভিন্ন সাহিত্য ও অন্যান্য বইয়ের নির্বাচন করে সাজিয়ে তুলেছে গ্রন্থাগারটি। এক বছর ধরে এই গ্রন্থাগারে আসা শিশুদের নিয়ে গল্প পাঠ, শ্রুতিনাটক, কবিতাপাঠ, গ্রন্থ প্রকাশ, সঙ্গীতানুষ্ঠান সহ নানা ধরনের অনুষ্ঠান চলবে।

দ্যা কলকাতা ইয়ং রিডার্স বোট লাইব্রেরি-তে একজন পাঠক বইপড়ার সাথে সাথে গঙ্গার স্নিগ্ধ হাওয়ার স্পর্শ নিতে নিতে তিলোত্তমা কলকাতার সৌন্দর্যও গঙ্গাবক্ষ থেকে উপভোগ করতে পারবেন।

বোট লাইব্রেরি পাঠকদের ৩ ঘণ্টার সফর করাবে গঙ্গাবক্ষে। আর শিশুদের জন্য ও ১৮ বছরের নিচে কন্যাশ্রী-দের জন্য থাকবে হাফ টিকিটের সুবিধা। ছোটদের সাথে সাথে প্রাপ্তবয়স্কদেরও আহ্বান জানানো হয়েছে এই গ্রন্থাগারে।

এপিজে সুরেন্দ্র গ্রুপের ডিরেক্টর প্রীতি পল ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানান, বইপড়া বিষয়ক যেকোনও উদ্যোগকে তাঁরা সবসময় সমর্থন করেন। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের পাঠকদের বইপড়ার প্রতি উৎসাহ বৃদ্ধি করা তাঁদের অন্যতম লক্ষ্য। তিনি আরও যোগ করেন, গঙ্গা ধার্মিক ও সাংস্কৃতিক ভাবে প্রচণ্ড তাৎপর্যপূর্ণ।

তাঁদের এই উদ্যোগ ছোটদের কাছে নদীর গুরুত্বকে অনুধাবন করতে সাহায্য করবে আর শিশুরাও এই সফরের মাধ্যমে বাংলার ঐতিহ্য ও শিকড়কে চিনতে শিখবে। শুধু বইপড়া বলেই নয়, এই গ্রন্থাগার শিশুদের বিনোদনেরও সুযোগ করে দেবে।

Show Full Article
Back to top button