যাদুঘরের সামনে এলোপাথাড়ি গুলি, দেড় ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান
শহরের অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান যাদুঘর। তার গেটের সামনেই চলল এলোপাথাড়ি গুলি। যাতে এক সিআইএসএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা চত্বরে।
তখন সন্ধে প্রায় সাড়ে ৬টা। ভারতীয় যাদুঘরের একটি গেট রয়েছে কিডস স্ট্রিটের দিকে। কিডস স্ট্রিটের এমএলএ হোস্টেলের সামনে ওই গেটের সামনে মোতায়েন ছিলেন সিআইএসএফ জওয়ানরা। যাদুঘরের কাছে সিআইএসএফ ক্যাম্পও রয়েছে।
কিডস স্ট্রিটের গেটের কাছে আচমকাই গুলি চলার শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। দ্রুত আতঙ্ক ছড়ায়। শনিবার সন্ধেয় খুব একটা লোকজন ওখানে ছিলেননা। যাঁরা ছিলেন তাঁরা দ্রুত পালান।
এদিকে ১ সিআইএসএফ জওয়ানই গুলি চালাতে শুরু করেন। গুলি গিয়ে লাগে ২ সিআইএসএফ জওয়ানের গায়ে। দ্রুত পুলিশ হাজির হয় এলাকায়। ওই সিআইএসএফ জওয়ান তখনও হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলি চালাতে প্রস্তুত।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল নিজে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে ওই সিআইএসএফ জওয়ানকে আত্মসমর্পণ করানোর জন্য চেষ্টা চালান। তার মধ্যেই কমান্ডো বাহিনী যাদুঘরে প্রবেশ করে।
এলাকা ঘিরে নেয় পুলিশ। তবে জোর করে নয়, বুঝিয়ে ওই সিআইএসএফ জওয়ানকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা চালাতে থাকেন পুলিশ কর্তারা। এদিকে সব সময় একটা ঝুঁকি ছিল। কারণ সিআইএসএফ ব্যারাক লক্ষ্য করে ফের গুলি চালালে আরও হতাহতের সম্ভাবনা ছিল।
প্রায় দেড় ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস প্রচেষ্টার পর পুলিশ ওই সিআইএসএফ জওয়ানকে নিরস্ত্র করে। আত্মসমর্পণ করতে রাজি হন তিনি। তাঁকে প্রথমে আটক করা হয়। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কার্যত হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন পুলিশ থেকে সিআইএসএফ জওয়ানরা। স্বস্তি পান সাধারণ মানুষও।
জানা গেছে যিনি গুলি চালিয়েছিলেন তাঁর নাম অক্ষয় কুমার মিশ্র। তিনি ওড়িশার বাসিন্দা। যাঁদের গুলি লাগে সেই সিআইএসএফ জওয়ান রঞ্জিত সরঙ্গি ও সুবীর ঘোষকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রঞ্জিত সরঙ্গিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সুবীর ঘোষের চিকিৎসা চলছে। জানা যাচ্ছে একে-৪৭ থেকে ১৫ রাউন্ডগুলি চালান অক্ষয়কুমার মিশ্র। কেন তিনি এমন করলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মানসিক অবসাদ নাকি অন্য কারণ রয়েছে তাও দেখছেন তদন্তকারীরা।