বোধনেই ভাসল কলকাতা, ঝেঁপে নামল বৃষ্টি, জমল জল
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেল। ষষ্ঠীর বিকেলেই ভিজল কলকাতা। কলকাতা সহ আশপাশের এলাকায় ঝেঁপে বৃষ্টি। বোধনেই মন খারাপ সকলের।
পূর্বাভাস মেনেই বৃষ্টি নামল ষষ্ঠীর বিকেলে। বিকেল সন্ধে নাগাদ প্রথমে বৃষ্টি নামে উত্তর কলকাতা ও মধ্য কলকাতায়। এরপর বৃষ্টি শুরু হয় দক্ষিণ কলকাতায়। হাল্কা নয়, বৃষ্টি নামে ঝেঁপে।
সন্ধে ৭টা থেকে চলা বৃষ্টি চলতেই থাকে। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। ফলে যাঁরা রাস্তায় ছিলেন তাঁরা মাথায় ছাতা দিয়েও জল থেকে বাঁচতে পারেননি। ঝাপটায় ছাতা অনেক ক্ষেত্রেই বাধ মানেনি।
নতুন পোশাক পরে ঠাকুর দেখতে বার হওয়া মানুষজন কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েন। অনেকে বাড়ি থেকে অনেকটা দূরেই চলে এসেছিলেন। ফলে তাঁরা চট করে যে ফিরে যাবেন তারও উপায় ছিলনা। বেশ কিছু প্যান্ডেলেও জল ঢুকতে থাকে। বৃষ্টি টানা চলায় অনেক জায়গায় জল জমে যায়।
সন্ধের মুখে ঠাকুর দেখতে বার হওয়া মানুষের ভিড় ছিল কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্রই। এদিন বৃষ্টি নামার পর অনেক রাস্তায় প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়। বহু মানুষ রাস্তায় আটকে পড়েন। বোধনেই কিন্তু পুজোর আনন্দের তাল কেটে দিল ঝেঁপে বজ্র বিদ্যুৎসহ বৃষ্টি।
পুজোর ঠাকুর দেখা এখন মহালয়া থেকেই শুরু হয়ে যায়। এক এক করে উদ্বোধন হয় পুজোর। সেখানে মানুষের ঢল নামে। কিন্তু পুজোর মূল ৫টা দিনের আমেজটাই আলাদা।
ওই দিনগুলো চুটিয়ে উপভোগ করার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই করে রাখেন সকলে। সেই ৫ দিনের শুরুটা হয় মহাষষ্ঠীর বোধন দিয়ে। সনাতনি রীতি মেনে শুরু হয় মা দুর্গার আরাধনা। সেই বোধনেই মন খারাপ হয়ে গেল শহরবাসীর।
মানসিক একটা প্রস্তুতি ছিল। তবু মনের কোণায় একটা ক্ষীণ আশা ছিল যে যদি দুর্যোগ কেটে যায়। যদি আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস সত্যি না হয়। কিন্তু সে আশা পূরণ হল না। ষষ্ঠীর সকালটা রোদ ঝলমলে থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশে মেঘের সঞ্চার শুরু হয়। ক্রমশ মেঘ জমাট বাঁধতে থাকে। আর তারপর বিকেল নামতেই শুরু হয় বৃষ্টি।
পূর্বাভাস ছিল ষষ্ঠীর দিন হাল্কা বৃষ্টির। কিন্তু তা হয়নি। ষষ্ঠীর সন্ধেয় ঝেঁপে বৃষ্টি হল। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস হল আগামী সপ্তমী ও অষ্টমীতে বৃষ্টির প্রকোপ আরও বাড়বে। দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। তুলনায় কম হলেও কলকাতা সহ আশপাশের জেলাগুলিতে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। আকাশ থাকবে মেঘলা।
সপ্তমী ও অষ্টমীর পর নবমী থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমবে। সেই সময় আবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়বে। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ পুজোর কটা দিন কতটা মাটি করে আপাতত সেটাই দেখার।