Kolkata

মহিলাদের দখলে রাত, রাজপথে উপচে পড়া অংশগ্রহণে অন্য স্বাধীনতার স্বাদ

স্বাধীনতা দিবসের আগের রাত সত্যিই চলে গেল মহিলাদের দখলে। অংশ নিলেন বহু পুরুষও। এমন গণআন্দোলন শেষ কবে দেখেছিল দেশ?

সাধারণ মানুষ যখন জেগে ওঠে তখন রাষ্ট্র শক্তিও পিছু হটে। এটাই ইতিহাস। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া যে পাল্টা সুনামি তৈরি করে তা বুধবার মধ্যরাতের রাজপথ দেখিয়ে দিল। মহিলাদের রাত দখলের কর্মসূচি কার্যত এক গণআন্দোলনের রূপ নিল।

দাবি মহিলাদের নিশ্চিত সুরক্ষা। আর সেই দাবিতে যখন প্রতিটি পাড়া থেকে প্রতিটি পরিবার থেকে মহিলারা রাত দখলে রাস্তায় নামলেন তা তাঁদের বহুদিনের জমা অসন্তোষকে সামনে নিয়ে এল।


যে মহিলারা সন্ধে রাতের দিকে পা বাড়ালে আর বাড়ির বাইরে থাকতেন না তাঁরা বাড়ির কিশোরী মেয়েটিকেও সঙ্গে করে বেড়িয়ে পড়েন রাত দখলের পথে। নির্ভীক শরীরী ভাষা, শক্ত চোয়াল, মুখের মধ্যে স্পষ্ট একটা ক্ষোভ, চোখে আগুন।

তাঁরা সকলে বেড়িয়ে পড়লেন রাস্তায়। উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া, বীরভূম থেকে মালদা, জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার। রাজ্যের এমন কোনও জেলা ছিলনা যেখানে মহিলারা বুক ভরা ক্রোধ নিয়ে রাস্তায় নামলেন না।


আরজি কর কাণ্ড যে রাজ্যের নারী শক্তিকে এভাবে পথে নামাবে, চোখে আঙুল দিয়ে অশুভ শক্তিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে, তাদের মনেও ভয় ঢোকাবে, তা বোধহয় দীর্ঘদিন ভারত দেখেনি।

নারী জাগলে যে চণ্ডী রূপ ধারণ করে অশুভ শক্তির ভয়ংকর বিনাশে নামতে পিছপা হয়না তা এই দুর্গা, কালীর উপাসক দেশ বুঝিয়ে দিয়েছে বুধবার রাতে। দেশের স্বাধীনতার ৭৭ বছরে এ এক নতুন স্বাধীনতার স্বাদ।

একেবারেই অহিংস আন্দোলন। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। তা কিন্তু ভয় ধরানোর জন্য যথেষ্ট। যাদের জন্য এই বার্তা, এই জমায়েত তাদের কিন্তু রাতের ঘুম উড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই আমজনতার আন্দোলনের ঢেউ বড় ধাক্কা।

মানুষ কিন্তু জাগছেন। অন্যায় যে করবে এবং অন্যায় যে সইবে, সকলের জন্য এই বার্তাটুকু হয়তো সামান্য হলেও আরজি করে নৃশংসভাবে শেষে হয়ে যাওয়া তরুণীটির আত্মাকে শান্তি দেবে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button