
২০১২ সালে পার্ক স্ট্রিটে গণধর্ষণের শিকার হন কলকাতাবাসী অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মহিলা সুজেট জর্ডন। নির্মম সেই ধর্ষণকাণ্ডে নাম জড়ায় কাদের খান সহ ৫ জনের। তাদের বিরুদ্ধে পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুজেট। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ খোঁজ শুরু করলে বেপাত্তা হয়ে যায় কাদের খান ও আলি খান। অনেক খুঁজেও তাদের খোঁজ মেলেনি। বাকিদের গ্রেফতার করার পর আদালতে চার্জশিট পেশের সময় পুলিশ জানায় কাদের ও আলি এখনও পলাতক। এদিকে পুলিশের কাছে খবর আসে দুজনে মুম্বই পালিয়ে গেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সেখানে ধাওয়া করেও তাদের টিকি ছুঁতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। তার আগেই দুই ধূর্ত অভিযুক্ত চম্পট দেয় বিহারের সীতামারিতে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়ি। সেখান থেকে পাটনা, গাজিয়াবাদ, দিল্লি, নয়ডা, বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেরিয়েছে তারা। অধিকাংশই তাদের আত্মীয়দের বাড়ি। কারণ পুলিশ জানতে পারে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় কাদের ও আলির আত্মীয়দের বাস। পুলিশও হাল ছাড়েনি। কিন্তু অত্যন্ত চালাকির সঙ্গে সব জায়গাতেই অল্প দিন করে থেকে ফের নতুন জায়গায় চলে যাওয়ায় পুলিশ কিছুতেই তাদের নাগাল পাচ্ছিল না। এমনকি ফোনের নম্বর থেকেও তাদের কোনও খোঁজ তারা করতে পারেনি। কেবল ভরসা ছিল পুলিশের নিজস্ব সোর্সের। আর সেই সোর্সেই বাজিমাত করল পুলিশ। তবে সাড়ে ৪ বছর পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়ানো মুখের কথা নয় বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। অনেকের সাহায্য না থাকলে এটা করা সম্ভব নয় বলেই তাঁরা মনে করছেন। তাই ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই সূত্রগুলো জানতে চাইবেন তাঁরা। কারা তাদের এতদিন লুকিয়ে বেড়াতে সাহায্য করল, কলকাতা থেকেই বা কে বা কারা তাদের সব খবর দিত, সবই জানার চেষ্টা করবে পুলিশ। তবে যাঁকে কেন্দ্র করে এতকাণ্ড সেই সুজেট জর্ডন আর বেঁচে নেই। বাকি ধৃতদের ক্ষেত্রে টি আই প্যারেডে তিনিই পুলিশকে চিনিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে তাদের ক্ষেত্রে মামলা এগোনো অনেক সহজ হয়েছিল। ৩ জনকেই ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। কিন্তু গণধর্ষণের মূল ২ অভিযুক্ত কাদের বা আলির ক্ষেত্রে সুজেটকে দিয়ে টি আই প্যারেড বা শনাক্তকরণের সুযোগ নেই। বরং সুজেটের করা অভিযোগকেই হাতিয়ার করে এগোবেন পুলিশ ও সুজেটের আইনজীবীরা।