আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। সবাই টাকা পাবেন। আশ্বাস দিলেন স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অরুন্ধতী ভট্টাচার্য। কিন্তু বাস্তবে কারও কোনও আশ্বাসই কাজে এল না। বরং প্রধানমন্ত্রীর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণার পর যা মনে করা হয়েছিল তাই হল। ব্যাঙ্ক খুলতেই উপচে পড়ল ভিড়। তৈরি হল বিশৃঙ্খলা। আগে টাকা বদলানোর জন্য ধাক্কাধাক্কি, ধস্তাধস্তি। কেউ উগরে দিলেন ক্ষোভ। কেউ গায়ের জোরে না পেরে লাইনের আগে দাঁড়িয়েও হুড়োহুড়িতে পিছিয়ে পড়লেন। ব্যাঙ্কের কয়েকটি শাখায় হাজারের লিমিট বেঁধে দেওয়ায় রাগে গজগজ করতে দেখা গেল আমজনতার অনেককেই। তাঁদের যুক্তি হল এতক্ষণ লাইন দিয়ে মাত্র হাজার টাকা বদল হলে তাঁরা এভাবে কদিন, কত ঘণ্টা করে লাইন দেবেন! অনেকে এসব শুনে আর লাইনের বহর দেখে ফিরে গেছেন শূন্যহাতে।
ব্যাঙ্কে যে ফর্মটি পূরণ করে জমা দিলে তবেই পুরানো নোট বদল করা যাচ্ছে, সেই ফর্ম ব্যাঙ্ক থেকে দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক জায়গাতেই তা অমিল। বরং ফর্ম বিক্রি হচ্ছে ব্যাঙ্কের বাইরে। দাম কোথাও ১ টাকা তো কোথাও ২ টাকা, কোথাও আবার মওকা বুঝে তার চেয়েও বেশিতে! এদিন সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ব্যাঙ্ক খোলা থাকার কথা ঘোষণা করেছে এসবিআই। কিন্তু তাতেও কী মানুষকে নিশ্চিন্ত করা যাচ্ছে? বোধহয় না! কারণ যেভাবে বেলা গড়িয়ে বিকেল হওয়ার পরও বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখায় লাইনের বহর কমেনি, তাতে রাত পর্যন্ত নোট পরিবর্তন করলেও অবস্থা সামাল দেওয়া মুশকিল বলেই মনে হয়েছে। অবশ্য লাইন দিলেই যে নোট বদল হবে তার কোনও নিশ্চয়তা ব্যাঙ্ক দিচ্ছে না। যতক্ষণ ক্যাশে টাকা আছে ততক্ষণ বদল চলবে বলে সাফ জানিয়েছে তারা। টাকা শেষ হয়ে গেলে কয়েক ঘণ্টা লাইন দেওয়ার পরও গ্রাহকদের খালিহাতে ফিরতে হতে পারে বলে জানিয়ে দিয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। একই পরিস্থিতি পোস্ট অফিসগুলোতেও। সেখানেও বিশাল লাইন রাস্তায় বেরিয়ে সাপের মত চলে গেছে বহুদূর। একএক জন ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা করে লাইনে দাঁড়িয়ে তবে টাকা হাতে পাচ্ছেন। ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে সকাল ৮টাতে গিয়ে লাইন দিয়েও অনেকেরই লাইনের অনেকটা পিছনে জায়গা হয়েছে। এদিকে এসবের মাঝেই পান্ডবেশ্বরে একটি ব্যাঙ্কের সামনে বিশাল লাইনে পকেটমারির ঘটনা ঘটেছে। ৩ হাজার টাকা পকেটমারি করে হাতেনাতে ধরা পড়ে একজন।