এমন ঘটনা সচরাচর চোখে পড়ে না। আগের দিন দম্পতিকে খুনের চেষ্টায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে যার নাম সামনে এসেছিল সেই ব্যক্তিরই দেহ উদ্ধার হল হোটেলের ঘর থেকে। ঘটনায় হতবাক পুলিশও। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার রাতে। কালীঘাটের একটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা জৈন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে হাজির হয় আত্মীয় রোশনলাল বরদাই। সঙ্গে ছিল তার এক সঙ্গী দীপক। বাড়িতে তখন ছিলেন নরেন্দ্র জৈন, তাঁর স্ত্রী সরলা জৈন ও তাঁদের একমাত্র মেয়ে। বেশ কিছুক্ষণ জৈন পরিবারের সঙ্গে খোশগল্পের পর নরেন্দ্র জৈনের ছাদের বাগান দেখতে চায় রোশনলাল। নরেন্দ্র জৈন রোশনলাল ও দীপক ছাদের বাগান দেখাতে নিয়ে যান। অভিযোগ সেখানেই আচমকা বছর পঞ্চাশের নরেন্দ্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে রোশনলাল। চিৎকার শুনে ছাদে এসে স্বামীর অবস্থা দেখে তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন সরলা জৈনও। ধারালো অস্ত্রের কোপে তাঁর হাত কব্জি থেকে খসে পড়ে যায়। এরপর আক্রান্ত জৈন দম্পতির মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে বেগতিক বুঝে সেখান থেকে চম্পট দেয় রোশনলাল ও দীপক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় জৈন দম্পতিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। তদন্তে পুলিশ রোশনলালের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখতে পায় হাওড়ায়। সেই টাওয়ার লোকেশন ধাওয়া করে গোলাবাড়ি থানা এলাকার একটি লজে পৌঁছয় পুলিশ। রবিবার সকালে সেখানে হাজির হয়ে রোশনলালকে ধরতে তার ঘরে হাজির হলে তাজ্জব বনে যায় পুলিশ। ঘর থেকে উদ্ধার হয় রোশনলালের দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, রোশনলালের ঘরে কীটনাশকের শিশি ও ধারালো অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে। আধার কার্ড দেখিয়ে শনিবার রাতে ওই লজে ওঠে রোশনলাল ও দীপক। আর সকালে রোশনলালের লাশ পাওয়া যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহের তির গিয়ে পড়েছে দীপকের ওপর। কিন্তু দীপক বেপাত্তা। তার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে মৃত রোশনলালের পেটে বিষের হদিশ মিলেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ব্যবসায়িক বিবাদের জেরেই বাঙুরের বাসিন্দা রোশনলাল নরেন্দ্র জৈনকে খুন করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারই বা কেন মৃত্যু হল তা পরিস্কার নয়। এর কারণ অনুতাপও হতে পারে। আবার তাকে খুনও করা হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।