ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতালে তাণ্ডব চালালেন রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা। একবালপুরের সিএমআরআই হাসপাতালে এদিন সকালে ভাঙচুর চালান তাঁরা। তছনছ করে দেওয়া হয় কাচের দরজা, জানলা, কম্পিউটার, ফুলের টব সহ অন্যান্য সামগ্রি। নষ্ট করে দেওয়া হয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথিও।
মারমুখী জনতার হাত থেকে রেহাই পাননি হাসপাতাল কর্মীরাও। ব্যাপক মারধর করা হয় তাঁদের। মেঝেতে ফেলে মারে অনেকেই গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। ৫০-৬০ জন যুবক এই তাণ্ডব চালান বলে অভিযোগ। পরপর ২ দফায় তাণ্ডব চালানো হয়। অবস্থা আয়ত্তে আনতে হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও ব়্যাফ।
রোগীর আত্মীয়দের দাবি, একবালপুরের বাসিন্দা কিশোরী সাইকা পরভিনকে গত মঙ্গলবার পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি করা হয়েছিল সিএমআরআইতে। বিষয়টা তেমন কিছু নয় বলে আশ্বস্ত করেন হাসপাতালের ডাক্তাররা। একটি অস্ত্রোপচার করতে পারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে আশ্বাসও দেওয়া হয় তাঁদের। অস্ত্রোপচারের জন্য দেড় লক্ষ টাকাও চাওয়া হয়। কিন্তু এদিন সকালে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মৃতার আত্মীয়দের দাবি, চিকিৎসায় গাফিলতির জেরেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই কিশোরীকে সংকটজনক অবস্থাতেই নিয়ে আসা হয়। অস্ত্রোপচারের জন্য রক্তচাপ সহ অন্যান্য বিষয়গুলি পরীক্ষা করার পর এদিন যখন চিকিৎসকেরা তাঁর অস্ত্রোপচারের জন্য তৈরি হচ্ছিলেন তখনই হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর।
এদিকে হাসপাতালে তাণ্ডবের জেরে ব্যাপক সমস্যায় পড়েন চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও রোগীর আত্মীয়রা। দূরদূরান্ত থেকে রোগীকে দেখাতে এসে আতান্তরে পড়েন তাঁরা। গণ্ডগোলের জেরে হাসপাতালের যাবতীয় আউটডোর পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘক্ষণ রোগী নিয়ে রাস্তায় অপেক্ষার পর ফিরে যান তাঁরা। আতঙ্ক ছড়ায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরিবারের মধ্যেও। তাঁরাও অনেকে দ্রুত হাসপাতালে চলে আসেন।
এভাবে সমস্যায় পড়ার জন্য ক্ষোভে রোগীর আত্মীয়রা ডায়মন্ডহারবার রোড অবরোধও করেন। যদিও পুলিশ অবরোধ সরিয়ে দেয়। পরে কিশোরীর দেহ নেওয়া বা ময়নাতদন্ত ঘিরেও জটিলতার সৃষ্টি হয় রোগীর পরিবারের মধ্যে।