অ্যাপোলো হাসপাতালকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিতর্কে এবার নড়েচড়ে বসল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর লাগাম ছাড়া বিল ও চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে রোগী পরিবারের অভিযোগ সামনে এলে রাজ্য সরকার যে হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না তা এদিন পরিস্কার করে দিল তারা। শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য দফতরে অ্যাপোলো কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে স্বাস্থ্যসচিব নিজে পুরো বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। খতিয়ে দেখেন কাগজপত্র। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব সাফ জানান ডানকুনির বাসিন্দা সঞ্জয় রায়ের চিকিৎসা ও বিল সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। আরও তথ্য হাসপাতালের কাছে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যে কাগজ হাতে এসেছে তাও খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন স্বাস্থ্যসচিব। এদিকে এদিনও সঞ্জয় রায়ের পরিবারকে চিকিৎসা বাবদ নেওয়া খরচ ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ। এদিন অন্য কয়েকটি ক্ষেত্রেও রোগীর পরিবারের তরফে অ্যাপোলোয় চিকিৎসা গাফিলতি ও অস্বাভাবিক বিল নিয়ে অভিযোগ জানানো হলেও তাতে বিশেষ আমল দিতে চায়নি অ্যাপোলো। অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের দাবি অবস্থার সুযোগ নিয়ে অনেকেই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার একটা খরচ আছে। তবে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করেও কেন রোগীর উন্নতি হয়না, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। তাঁদের যুক্তি, যে কোনও হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতেই পারে। এদিকে চিকিৎসা গাফিলতি ও বেসরকারি হাসপাতালের চাপ সৃষ্টি নিয়ে অভিযোগের মাঝেই সামনে এসেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। বর্ধমানের পিজি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ চিকিৎসার বিল না মেটালে মেয়েকে হোমে পাঠানোর ভয় দেখায় নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ। পরিবারের অভিযোগ নার্সিং হোমের বিল মেটাতে অপারগ পিতা অনেক চেষ্টার পরও টাকার সংস্থান না করতে পেরে অবশেষে আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনা সামনে আসার পর পিজি নার্সিংহোমে হাজির হয় পুলিশ। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে তারা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরও। বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে তারা।