দুপুর পৌনে ১টা। আচমকাই ১২ নম্বর প্রিটোরিয়া স্ট্রিটের বহুতলের ৪ তলা থেকে ধোঁয়া বার হতে দেখেন স্থানীয় মানুষজন। পুরো বাড়ির সামনেটাই কাচ ঢাকা। ফলে ভিতরে কি হচ্ছে বোঝার উপায় নেই। তবে আগুন যে লেগেছে তা পরিস্কার হতেই দমকলে খবর যায়। পাশাপাশি খবর দেওয়া হয় লাগোয়া স্কুলেও। আগুন বা ধোঁয়া থেকে স্কুল পড়ুয়াদের যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য তাদের দ্রুত উল্টো দিকে বাড়িতে স্থানান্তরিত করতে বলা হয়। শোনামাত্রই দ্রুত পড়ুয়াদের সামনের বাড়িটিতে সরিয়ে নিয়ে যান স্কুল কর্তৃপক্ষ। এদিকে আগুনের খবর পৌঁছনোর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় দমকলের ১০টি ইঞ্জিন। ততক্ষণে বাড়ির ভিতরে থাকা মানুষজন কেউ ছাদে উঠে গেছেন, কেউ পাঁচিলে ঝুলছেন, কেউ হাত নেড়ে বাঁচার আর্তি জানাচ্ছেন। কাচের জানালা দিয়ে সব ঢাকা থাকায় প্রবল ধোঁয়ায় ভিতরে দমবন্ধ হওয়ার জোগাড় হয় সকলের।
দমকল কর্মীরা প্রথমেই ধোঁয়া বার করার জন্য কয়েকটা জানলার কাচ ভাঙা শুরু করেন। প্রথম দিকে থান ইট মেরেও ভেঙে দেওয়া হয় কাচ। ফলে গলগল করে ধোঁয়া বার হতে থাকে। এরপর হাইড্রোলিক ল্যাডারের সাহায্যে উপরে উঠে আরও কাচ ভেঙে মুখে মাস্ক পরে বাড়ির ভেতরে ঢোকেন দমকলকর্মীরা। চলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ। এদিকে দমকলকর্মীদের একাংশ বাড়ি থেকে মানুষজনকে বার করে আনার কাজে হাত লাগান। আশপাশের মানুষও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এক এক করে আটকে পড়া মানুষজনকে বার করে আনা হয়। ঘটনাস্থলে হাজির হন দমকলমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। দুপুর ২টোর পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। দমকলের প্রাথমিক অনুমান শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লাগে। এদিকে ঘটনার জেরে ব্যস্ত সময়ে বন্ধ হয়ে যায় প্রিটোরিয়া স্ট্রিটে যান চলাচল। আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। পাশে স্কুল থাকায় সেখানেও আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। খবর পেয়ে হাঁকপাঁক করে ছুটে আসেন অভিভাবকরাও। পরে অবশ্য সব পড়ুয়াকেই সুরক্ষিত অবস্থায় অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আগুন লাগার সঠিক কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত হবে।