যাঁরা প্রত্যেকদিন বাজার করেন, তাঁরা নিয়মিত বাজারমুখো হওয়া পরিত্যাগ করেছেন। যাঁরা সময়ের অভাবে সপ্তাহে ১টি কি ২ দিন ব্যাগ ভরে বাজার করে এনে ফ্রিজ বন্দি করে চালান তাঁদের ব্যাগের তলানিতে ঠেকেছে বাজারের বহর। রিকশাওয়ালারা অনেক বাজারের মুখে সকালের দিকে ভিড় জমাতেন ভারী ব্যাগ হাতে সওয়ারির আশায়। পেতেনও অনেককে। কিন্তু এখন বাজারের ব্যাগের ওজন প্রায় না থাকায় অনেকেই রিক্সা ছেড়ে হাতের ব্যাগ হাতে ঝুলিয়েই ব্যাজার মুখে বাড়ি ফিরছেন। ফলে রিকশাওয়ালারা অন্যত্র সওয়ারির আশায় ঘুরপাক খাচ্ছেন।
এই সব ঘটনা যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে তা হল সবজির দাম। যাকে ভয়ংকর বললেও কম বলা হয়। আলু বাদ দিলে আর যাবতীয় সবজিতে হাত ছোঁয়ানোর চেষ্টা করলেও ছেঁকা খাচ্ছেন ছাপোষা বাঙালি। দামগুলো দেখলেই টের পাওয়া যাচ্ছে অবস্থাটা ঠিক কেমন।
বাজার বিশেষে সামান্য এদিক ওদিক হচ্ছে কেজি প্রতি দাম। যেমন ধরুন, টোম্যাটো ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, পটল ৫০ টাকা কেজি, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, উচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, কুমড়ো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, ক্যাপসিকাম ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি, বিনস ১২০ টাকা কেজি, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, ছোট ফুলকপি ৩০ টাকা পিস, লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, কাঁচালঙ্কা ১৫০ টাকা কেজি, আদা ১৪০ টাকা কেজি।
কেবল মাত্র আলুর দামের কোনও হেরফের হয়নি। চন্দ্রমুখী আলু ১৫ টাকা কেজি ও জ্যোতি আলু ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা কেজিতে দাঁড়িয়ে আছে। ফলে কাঁচা আনাজ দেখা যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু দোকান থেকে কেনা কার্যত দুরূহ হয়ে উঠেছে বাজেট মেপে বাজার করা বাঙালির জন্য।
দোকানিদের দাবি, অসময়ের একের পর এক ঝড় বৃষ্টি অনেক আনাজ নষ্ট করেছে। অনেক জায়গায় নাকি চাঁদার জুলুমেরও শিকার হতে হয়েছে। সব মিলিয়ে দাম চড়েছে উল্কার গতিতে। আর টান পড়েছে বাঙালির পাতে। বরং মাছ, মাংস বা ডিমের দামটা তুলনামূলকভাবে একই জায়গায় রয়ে গেছে। ফলে অনেককেই বাজার গিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে বলতে শোনা যাচ্ছে আনাজ খাওয়ার চেয়ে মাছ ভাত খাওয়া ঢের ভাল। দাম তো প্রায় কাছাকাছিই পড়ে যাচ্ছে।
সবজির বাজারের বিক্রেতাদের দাবি, এই দাম নিয়ন্ত্রণে আসতে এখনও দিন ১৫ তো লাগবেই। তার আগে আপাতত পাতে সামান্য সবজির ছোঁয়াতেই তুষ্ট থাকতে হবে মধ্যবিত্ত বাঙালিকে।