ছিল রুমাল, হয়ে গেল বিড়াল। অন্যভাবে বললে, ছিল শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, তা হয়ে গেল রণক্ষেত্র। কেউ চেয়ার শূন্যে তুলে ধরে দড়াম করে মাটিতে আছাড় মারলেন। কেউ লাথি মেরে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে দিলেন। কেউবা মাটিতে মিশিয়ে দিতে চাইলেন মঞ্চ। কেউ কেউ মানব-শৃঙ্খল তৈরি করে অবরুদ্ধ করল রাজপথ। শুরু হল ধ্বস্তাধস্তি। বুধবার বেলা গড়াতে এমন দৃশ্যেরই সাক্ষী থাকল কলকাতার ব্যস্ততম রাসবিহারী মোড়। ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের বর্ষপূর্তির দিনটিকে ‘কালা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশে গোটা রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ।
পাল্টা দিনটিকে কালো টাকা বিরোধী দিবস বলে ব্যাখ্যা করে পথে নামে বিজেপিও। বুধবার মহানগরীর রাজপথে পুলিশের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। এদিন রাসবিহারী মোড়ে একটি স্ট্রিট কর্নার করছিল বিজেপি। মিষ্টি বিলি চলছিল। পুড়ছিল বাজিও। সেই সময়ে তৃণমূলের একটি মিছিল নোটবাতিল ও জিএসটি বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে গড়িয়াহাট হয়ে সেখান দিয়ে পাস করছিল। রাসবিহারী মোড়ে পৌঁছতেই মিছিলের পাশে পড়ে বিজেপির স্ট্রিট কর্নার। পরস্পর মুখোমুখি হতেই দুই দল তাদের গলার সুর চড়িয়ে দেয়। শুরু হয় মৌখিক বিবাদ। যা দ্রুত হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
অভিযোগ, এরপরই তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির মঞ্চ ভাঙচুর করেন। ভাঙা হয় মঞ্চের সামনে রাখা চেয়ার। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার জেরে দীর্ঘক্ষণ যানচলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। আতঙ্ক ছড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। তৃণমূল সমর্থকরাই প্রথমে তাঁদের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ করেন বিজেপি সমর্থকরা। তাঁদের বিরুদ্ধে আনা বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। উল্টে তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নামে অশ্লীল কথা বলছিলেন বিজেপি সমর্থকরা। তাই তাঁরা কেবল মৌখিক প্রতিবাদ করেছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ উত্তেজনা চলার পর অবশেষে অবস্থা আয়ত্তে আনে পুলিশ।