ঘরের ভিতরে ২৫টির মত গুপ্ত কুঠুরি। তার সঙ্গে রয়েছে মেঝের নিচ থেকে মাটির গভীরে চলে যাওয়া লম্বা সুড়ঙ্গ। সুড়ঙ্গপথের ভিতরে রয়েছে আবার বেশ কয়েকটি ধাপ ও কুঠুরি। পুলিশ আর সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্যই এই নির্মাণ। মানুষকে বোকা বানানোর জন্য উপরের ঘরে চারদিকে ঠাকুর-দেবতার ছবি সাজানো। আর মিউজিক বক্স থেকে অনবরত বেজে চলেছে ভক্তিমূলক শ্লোকমন্ত্র। তবে হরিয়ানার ডেরা সচ্চা সৌদার মত সেখানে পাওয়া যায়নি বৈভবের চাকচিক্য। বাদ বাকিটা একই রকমের। ঘরের ভিতরে থাকা একাধিক ঘরেই চলত দেহব্যবসার বিরাট রমরমা। বড়বাজারের বহুতলের বাসিন্দা স্বঘোষিত রাম রহিমের শিষ্য সম্পর্কে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এল।
অভিযোগ উঠেছে বড়বাজার থানার ঠিক উল্টোদিকের বহুতলের বাসিন্দা প্রমোদ সিঙ্ঘানিয়ার বিরুদ্ধে। নিজেকে এতদিন ডেরা সচ্চা সৌদার ‘ধর্ষক’ গুরু রাম রহিমের ভক্ত বলেই দাবি করে এসেছে সে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১০ আঙুলে ৩০-৪০টির মত আংটি পরা ওই ব্যক্তি নিজেকে ‘সাধু’ বলে দাবি করত। দিনে ৭-৮ বার নাকি মন্দির দর্শনেও যেত প্রমোদ সিঙ্ঘানিয়া। তবে তার সেই বাহ্যিক ধর্মাচরণের আড়ালে অন্য কিছুর গন্ধ পেয়েছিলেন প্রতিবেশিরা। একজন সাধুর ডেরায় এত অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের ভিড় লেগে থাকে কেন? তাঁদের সেই সন্দেহের অবসান হয় গত বছর ২৫ ডিসেম্বর। ওইদিন স্বঘোষিত রাম রহিমের শিষ্যের ঘর থেকে হাতেনাতে অসংলগ্ন অবস্থায় থাকা তরুণ-তরুণীদের পাকড়াও করেন স্থানীয়রা। তাদের চেপে ধরতেই ফাঁস হয়ে যায় স্বঘোষিত সাধুর ভণ্ডামি।
ধর্মীয় আস্তানায় মধুচক্র চলার বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ জানান বড়বাজার থানায়। কিন্তু ততক্ষণে বিপদের আঁচ পেয়ে সুড়ঙ্গ পথ ধরে চম্পট দেয় অভিযুক্ত প্রমোদ। থানার ঠিক উল্টোদিকেই কি করে এমন জমজমাট মধুচক্রের ব্যবসা অভিযুক্ত ব্যক্তি চালাতে পারল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। ঘটনার তদন্তে নেমে ফেরার বাবা রাম রহিমের শিষ্যের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।