Kolkata

মুখ্যমন্ত্রীকে আসতে হবে, দাবিতে উত্তাল দুর্ঘটনাস্থল

দাউ দাউ করে জ্বলছে বাস। কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ঢেকে গেছে আকাশ। রাস্তার এদিক ওদিক ছড়িয়ে ভাঙা ইটের টুকরো। ক্ষিপ্ত জনতার রণংদেহী রোষের মুখে পড়ে আস্ত নেই আশপাশের একটা গাড়িও। এদিকে জ্বলন্ত গাড়ির কাছে যেতে পারছে না দমকল বাহিনী। এক পা এগোলেই উন্মত্ত জনতার রোষের মুখে পড়তে হবে তাদের। উত্তাল জনস্রোতের সামনে কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ দশা পুলিশেরও। লাঠিচার্জ মুখ থুবড়ে পড়েছে উত্তেজিত জনতার দাপটের সামনে। বাইপাস জুড়ে তখন অমানুষিক যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে চলেছে। অথচ সামনের গাড়ির এগিয়ে যাওয়ার বিন্দুমাত্র লক্ষণ নেই।

শনিবার মাথার উপর সূর্য উঠে গেলেও সেই যাত্রী দুর্ভোগের ছবি বদলাতে দেখা যায়নি ইএম বাইপাসে। ছবি বদলাতে গেলে চিংড়িঘাটায় আসতে হবে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁর মুখ থেকেই আশ্বাস শুনতে চান ক্ষিপ্ত জনতা। অন্য কারও কথা তাঁরা শুনবেন না। একথা কার্যত ঘোষণার সুরেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেন ক্ষিপ্ত জনতার একাংশ। চিংড়িঘাটা মোড়ের মুখে বসাতে হবে ট্র্যাফিক গার্ড। কাজ শুরু করতে হবে সাবওয়ে নির্মাণের। পুলিশকে হয়ে উঠতে হবে আরও সক্রিয়। চিংড়িঘাটা মোড়ের বাসিন্দাদের এইসব দাবিতে শনিবার সকাল থেকে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল কলকাতা শহরের একাংশ।


শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকেই কুরুক্ষেত্রের চেহারা নেয় ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটা মোড়। কয়েক মিনিট আগেই হাওড়া থেকে সল্টলেকগামী বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে গেছেন ২ তরুণ। যার মধ্যে বিশ্বজিৎ ভুঁইয়া নামের ১ তরুণ কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। কেন বারবার পুলিশের গাফিলতির মাশুল দিতে হবে বেলেঘাটাবাসীকে? এই প্রশ্নে সোচ্চার হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা। রাস্তার উপরেই বসে পড়ে নিজেদের দাবি দাওয়া জানাতে থাকেন বহু মহিলা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন বিধায়ক সুজিত বসু। কিন্তু তাঁর আশ্বাসে যে চিঁড়ে ভিজবে না, সেকথা স্পষ্ট হয়ে যায় বিক্ষুব্ধদের অনড় অবস্থানে। বাধ্য হয়ে উত্তেজিত জনতাকে সামলাতে ফের লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাসের শরণাপন্ন হতে হয় পুলিশকে। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট আর বোতল ছুঁড়তে থাকেন এলাকাবাসী। তাঁদের দুর্ঘটনাস্থল থেকে হঠাতে হাতে ইট তুলে নেয় পুলিশও। সব মিলিয়ে দুর্ঘটনার ৪ ঘণ্টা পরও বিক্ষোভে ফুটছে চিংড়িঘাটা। বেলা ২টোর পর থেকে পুলিশি সক্রিয়তায় কিছুটা পিছু হটতে যদিও বাধ্য হয় উত্তাল জনতা। তাতে অবশ্য যানজটের দুর্ভোগে পড়া মানুষের হয়রানি খুব একটা কমতে দেখা যায়নি।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button