Kolkata

নাচের শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ, উত্তাল কারমেল

জিডি বিড়লা স্কুলের ছায়া এবার কারমেল প্রাইমারি স্কুলে। দেশপ্রিয় পার্ক সংলগ্ন এই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে এদিন সকাল থেকেই উত্তেজনা দানা বাঁধতে থাকে স্কুল চত্বরে। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা ভিড় জমাতে থাকেন। তাঁদের দাবি, ওই ছাত্রীকে দিনের পর দিন নাচের শিক্ষক স্কুলের মধ্যেই বিভিন্নভাবে যৌন নিগ্রহ করত। বিষয়টি বাড়িতে জানালে তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হত বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। এদিকে দিনের পর দিন এমন চলতে থাকায় গত বুধবার থেকে আতঙ্কে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয় ওই ছাত্রী।

শুক্রবার এ বিষয়ে স্কুলের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। তাঁরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাইলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তা দেখাতে পারেননি। বরং অভিভাবকদের দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই নাচের শিক্ষককে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। অধ্যক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ার এরপর স্কুল চত্বরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বহু অভিভাবক। অবস্থা সামলাতে এক সময়ে টালিগঞ্জ থানার পুলিশ আসে। পুলিশ এসে বিক্ষোভ তুলতে গেলে অভিভাবকদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ পুলিশ তাঁদের ওপর লাঠিচার্জও করে। অন্যদিকে ধস্তাধস্তির মধ্যেই হেলমেট দিয়ে টালিগঞ্জ থানার ওসি ও অ্যাডিশনাল ওসিকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ২ জনেই আহত হন।


বেশ কিছুক্ষণ অভিভাবক পুলিশ ধস্তাধস্তি চলার পর অবশেষে অভিযুক্ত নাচের শিক্ষক সৌমেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে স্কুল থেকে বার করার সময়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের রোষের শিকার হয় অভিযুক্ত। পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যেও তাকে ব্যাপক মারধর করেন অভিভাবকরা। যে যেমনভাবে পেরেছেন মেরেছেন। ক্ষোভ যে কোন পর্যায়ে ছিল তা অভিযুক্তকে পুলিশের গাড়িতে তোলার সময়ের অভিভাবকদের প্রহার থেকেই স্পষ্ট। অভিযুক্তকে পুলিশ থানায় নিয়ে গেলেও দুপুরের পরও স্কুল চত্বরে ভিড় করে থাকেন ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।

দুপুরের পর কারমেল স্কুলে আটকে থাকা অন্যান্য পড়ুয়াদের এক এক করে বার করে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে এদিনের ঘটনায় পুলিশের ব্যবহার নিয়ে প্রবল ক্ষোভ রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রয়েছে রাশি রাশি অভিযোগ। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নিয়েও স্কুলে ছাত্রীদের যথেষ্ট সুরক্ষা বন্দোবস্ত করতে অপারগ স্কুল কর্তৃপক্ষ বলে দাবি অভিভাবকদের। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে নাচ একটি শারীরিক বিষয়, সেখানে কীকরে দিনের পর দিন স্কুল এভাবে একজন পুরুষ নাচের শিক্ষককে স্কুলে জায়গা দিলেন? কেন ছাত্রীদের নাচ শেখানোর দায়িত্ব একজন পুরুষ শিক্ষকের হাতে তুলে দেওয়া হল? এই কেন গুলির যদিও কোনও উত্তর স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে পাওয়া যায়নি। তবে জিডি বিড়লার মত ভয়ংকর ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও যে শহরের তথাকথিত নামীদামী বেসরকারি স্কুলগুলির টনক নড়েনি তা কারমেলের ঘটনা ফের প্রমাণ করে দিল।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button