সোমবার সকালে নিজের ঘরে কাজে ব্যস্ত ছিলেন নরেশ বেহরা। মেটিয়াবুরুজের ব্রাহ্মসমাজ লেনে একটি আবাসনে স্ত্রী ও ২ সন্তানকে নিয়ে তাঁর সাজানো সংসার। ২ কামরার ফ্ল্যাটে একটি ঘরে স্ত্রীর সাথে তিনি কথা বলছিলেন। যমজ ২ সন্তান বসার ঘরে সেইসময় নিজেদের মতো খেলা করছিল। কাজে ব্যস্ত থাকায় তাদের দিকে কড়া নজর অতটা দিতে পারেননি স্বামী-স্ত্রী। সেই ভুলের মাশুলই দিতে হল তাঁদের! এমনটাই এখন মনে করে নিজেদের দুষছেন ওই দম্পতি।
মা বাবার ব্যস্ততার ফাঁকে খেলতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হল তাঁদের একমাত্র পুত্রসন্তানের। যার বয়স মাত্র ১ বছর ৩ মাস! ছোট্ট ছেলেটা এই বয়সে ভালোভাবে হাঁটতেও শেখেনি। সোমবার মা বাবার নজর এড়িয়ে হামা দিতে দিতে সে খোলা দরজা দিয়ে শৌচাগারে ঢুকে পড়ে। শৌচাগারের ভিতর রাখা ছিল জলভর্তি বালতি। ছোট্ট রাজগোপাল খেলার ছলে জলভরা বালতির মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দেয়। মৃত শিশুর অভিভাবকের অনুমান, বালতির নিচের দিকে জল থাকায় ভালোভাবে জল ঘাঁটতে পারছিল না সে। তাই খেলার ছলে ছোট্ট শরীরটাকে নিয়ে সম্ভবত বালতির দিকে ঝুঁকে পড়েছিল। ফলে টাল সামলাতে না পেরে বালতির ভিতরে ঢুকে যায় রাজগোপালের শরীর। তার ছোট্ট মাথা ঢুকে যায় জলের ভিতর।
পুলিশের অনুমান, ওই অবস্থায় বালতি থেকে নিজেকে তুলতে পারার ক্ষমতা ছিল না শিশুটির। জলের ভিতরেই নিঃশ্বাস নিতে না পেরে তাই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার। পরে ছেলেকে বসার ঘরে দেখতে না পেয়ে তার খোঁজ শুরু করেন স্বামী-স্ত্রী। বাথরুমে বালতির মধ্যে ছেলের ওল্টানো শরীর দেখে আঁতকে ওঠেন তাঁরা। তড়িঘড়ি ছেলেকে বালতি থেকে তুলে আনলেও ততক্ষণে দম আটকে মৃত্যু হয়েছে ছোট্ট রাজগোপালের। দুধের শিশুর এমন অভাবনীয় মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ব্রাহ্মসমাজ লেনের বাসিন্দাদের মধ্যে। দুধের শিশুকে হারিয়ে কার্যত বাকরুদ্ধ মৃত শিশুর মা বাবা। জল ভর্তি বালতিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর পিছনে দুর্ঘটনার তত্ত্ব ছাড়া অন্য কোনও কারণ আছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।