বেশ কিছুদিন ধরে একটা তীব্র দুর্গন্ধ নাকে আসছিল এলাকাবাসীর। কটু গন্ধটা আসছিল দমদম বেদিয়াপাড়ার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রোডের ৮০৫ নম্বর বাড়ি থেকে। বাড়ির দরজা বেশ কিছুদিন ধরেই তালাবন্ধ। বন্ধ ঘরের সব জানালাও। তাই ভিতরে ঠিক কি মরে আছে তা দেখার উপায় ছিল না প্রতিবেশিদের। সকলে ভেবেছিলেন, বোধহয় ইঁদুর বিড়াল ঘরের ভিতর মরে পড়ে আছে। তাই এত বিশ্রী গন্ধ বেরচ্ছে ঘর থেকে। তাঁদের সেই ভাবনা যে কতটা ভুল ছিল তার প্রমাণ মেলে হাতেনাতে। বিকট গা গুলিয়ে ওঠা গন্ধ থেকে বাঁচতে প্রতিবেশিরা সোমবার খবর দেন বাড়ির মালিককে। রাতে তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে থ মেরে যান সকলে। দেখেন, ঘরের ভিতরে পড়ে রয়েছে সোমনাথ সরকারের বিকৃত মৃতদেহ। যিনি গত ৮-৯ মাস ধরে ৮০৫ নম্বর বাড়িতে ভাড়ায় রয়েছেন। বছর ৪৫-এর ওই ব্যক্তির দেহকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
মাথায় চাপ চাপ রক্ত। মেঝের ওপর পড়ে থাকা নিথর শরীরটা চোখে পড়তেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাড়ির মালিকের দাবি, পেশায় চিত্র সাংবাদিক হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। যদিও নিজের সঠিক পরিচয়পত্র ৮-৯ মাসের মধ্যেও বাড়িওয়ালার কাছে জমা করেননি তিনি। এলাকাবাসীর দাবি, ওই ব্যক্তি পাড়ায় কারও সাথে মিশতেন না। নিজের মত থাকতেন। এমনকি তাঁর সাথে কোনও বন্ধু বা আত্মীয়ও দেখা করতে আসতেন না। এলাকার বাসিন্দাদের এসমস্ত দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সম্ভবত পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। কিন্তু কেন তিনি এতদিন নিজের পরিচয়পত্র জমা করেননি বাড়ির মালিকের কাছে? আকস্মিক মৃত্যু হলে দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ ছিল কেন? কেন তিনি লোকজনের সংসর্গ এড়িয়ে চলতেন? চিত্র সাংবাদিকের রহস্যমৃত্যুর জট ছাড়াতে এসমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতের আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের খোঁজে তথ্য জোগাড় করা শুরু করেছে পুলিশ।