দেড় ঘণ্টার আগুন কেড়ে নিয়েছে সর্বস্ব। এক লহমায় ছাই হয়ে গেছে জরুরি কাগজপত্র। পুড়ে খাক হয়ে গেছে মাথার ছাদ। যেদিকে দু চোখ যায়, শুধু চোখে পড়ে অগ্নিরাক্ষসের উগড়ে দেওয়া অবশিষ্ট। সেই অবশিষ্ট হাতড়ে লাভ নেই। মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো গয়না, চিকিৎসার জরুরি নথি, মিলবে না কিছুই। ধূসর ছাইয়ের গাদায় মৃত্যু হয়েছে শত শত বই, খাতা, কলমের। ঘরে রাখা তিল তিল করে জমানো পুঁজিও চলে গেছে রাক্ষুসে আগুনের পেটে। কি করে আজকের রাতটা কাটবে? কালকের দিনই বা চলবে কি করে? অসুস্থ মানুষগুলোর চিকিৎসা কি করে হবে? মেয়ের বিয়েই বা দেবেন কি ভাবে? সন্তানরাই বা কি করে লেখাপড়া করবে? এই সব প্রশ্নই এখন তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে আর্মেনিয়ান ঘাটের অদূরের পুড়ে যাওয়া বস্তির সব হারানো মানুষগুলোকে।
বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ আচমকাই আগুন ধরে যায় স্ট্র্যান্ড রোডের একটি রাসায়নিক গুদামে। গুদামের ভিতর মজুত ছিল দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ। আগুন লাগতেই তাই সিঁদুরে মেঘ দেখতে থাকেন গুদাম সংলগ্ন ঝুপড়িবাসী। আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই আশঙ্কায় তাড়াতাড়ি ঘর থেকে দরকারি জিনিস টেনে বাইরে বার করার চেষ্টাও করেছিলেন অনেকে। কিন্তু বিধ্বংসী আগুন তাদের সেই সময়টুকু দেয়নি। চোখের পলক ফেলার আগেই আগুন গিলে খেতে থাকে ঝুপড়িগুলোকে। মুহুর্তে ভস্মীভূত হয়ে যায় শতাধিক ঝুপড়ি। সব হারানোর হাহাকারে ভরে ওঠে আর্মেনিয়ান ঘাট এলাকা।