ঘড়ির কাঁটায় তখন বাজে বেলা পৌনে ১২টা। আচমকাই তীব্র বিস্ফোরণে চমক ভাঙে আর্মেনিয়ান ঘাটের আশপাশের লোকজনের। শব্দের উৎস খোঁজার প্রয়োজন পড়েনি। তার আগেই সকলের চোখের সামনে জ্বলে ওঠে আগুনের লেলিহান শিখা। চারদিকে দাহ্য পদার্থ। ফলে দ্রুত আগুন ছড়াতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেই আগুন গিলে নেয় মেট্রো প্রকল্পের পিছনের পরিত্যক্ত গুদামের অধিকাংশটাই। এই গুদাম এলাকাবাসীর কাছে রাজ সিংয়ের রাসায়নিক গুদাম নামেই পরিচিত। অভিযোগ, বহু বছর ধরে বেআইনিভাবে গুদামটি চালাচ্ছে তার মালিক। গুদামের ভিতর মজুত করে রাখা হত নানা ধরণের কেমিক্যাল ড্রাম। পুলিশের ধারণা, সেই ড্রামের কোনও একটি ফেটে গিয়েই আগুন ধরে যায়। দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে এসে আগুন নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার দেড় ঘণ্টার মধ্যে পুড়ে খাক হয়ে যায় ১০০টির মত ঝুপড়ি। বেলা ৩টের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন।
পাশেই গঙ্গা। ফলে জল পেতে সুবিধে হয়। হোস পাইপ দিয়ে গঙ্গার জল টেনে চলে কুলিংয়ের কাজ। গুদামের ভিতর বা আশেপাশে কোথাও ছাই চাপা আগুন রয়ে গেল কিনা তা খতিয়ে দেখেন দমকলকর্মীরা। আগুন নেভাতে নিজেদের মত করে চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। যার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন। আগুনের প্রচণ্ড তাপে ফেটে চৌচির হয়ে যায় কারখানার দেওয়াল। ফাটল থেকে গলগল করে বেরিয়ে আসতে থাকে বিষাক্ত তরল রাসায়নিক। সেই রাসায়নিকে ফের আগুন লাগার ভয়ে আতঙ্ক ছড়ায় ঝুপড়িবাসীর মধ্যে। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে আসে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের দল। পোড়া ছাই, ধ্বংসস্তূপের নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞেরা।