সহপাঠীরা সকলেই এখন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। কিন্তু বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা অরিজিৎ দাসের আর বাকি পরীক্ষায় বসা হল না। অভিযোগ, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের জালিয়াতি ও দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে শেষ হয়ে গেল বছর ১৬-র কিশোরের জীবন।
সূত্রের খবর, গত বুধবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে অরিজিৎ দাস। জ্বরের সঙ্গে তার কোমরে ব্যথা শুরু হয়। তাকে প্রথমে নলহাটি, পরে রামপুরহাটের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে অসুস্থ কিশোরকে বর্ধমানের অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমে ভর্তি করে তার পরিবার। কিন্তু সেখানেও অরিজিতের অবস্থার কোনওরকম উন্নতি ঘটেনি বলে দাবি কিশোরের পরিজনদের।
অভিযোগ, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অসুস্থ কিশোরকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা জানায়। আইসিইউ সুবিধাযুক্ত অ্যাম্বুলেন্সে করে তারাই কিশোরকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে। তবে শর্ত ছিল ২টো। অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে নজরে রাখার জন্য একজন চিকিৎসককে নিয়ে যেতে হবে। সেই চিকিৎসকের ব্যবস্থা করবে নার্সিংহোমই। আর অ্যাম্বুলেন্সে রোগীর কোনও আত্মীয়ের থাকা চলবে না। কিশোরের মামার দাবি, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের শর্ত মেনেও নেন তাঁরা।
১৬ হাজার টাকায় ভাড়া করা অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয় কিশোরকে। বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছলে চিকিৎসকরা অরিজিৎ দাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে মৃত কিশোরের বাড়ির লোক।
তাঁদের অভিযোগ, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক হিসেবে সরফরাজউদ্দিন শেখ নামে এক ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে পাঠায়। যে আদতে কোন চিকিৎসক নয়। ওই নার্সিংহোমের একজন এসি মেকানিক।
মৃতের পরিবারের দাবি, রাস্তায় রোগীর অবস্থার অবনতি হলেও, সরফরাজউদ্দিন কিছুই করতে পারেনি। উল্টে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে অভিযুক্ত তাঁদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল বলে দাবি মৃতের আত্মীয়দের। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে মেকানিক ও অ্যাম্বুলেন্স চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।