৬০ বছর ধরে তিলে তিলে বাংলা নাট্যজগতে স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তুলেছে ‘সুন্দরম’। কর্ণধার মনোজ মিত্রের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই নাট্যগোষ্ঠী কম ইতিহাস তৈরি করেনি। সেই ঐতিহাসিক নাট্যদলকেই আইনি জটিলতার মারপ্যাঁচে হতে হল বাস্তুহারা। এখন কোথায় রিহার্সাল হবে সেই উত্তর জানা নেই কারোর। কারণ আদালতের নির্দেশে ৫৭ নম্বর যতীন দাস রোডের ভাড়া বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে মনোজ মিত্রের জিনিসপত্র। ‘সুন্দরম’ ভাড়াবাড়িতে গত বৃহস্পতিবার অবধি সাজানো বাগান ছিল ‘বাঞ্ছারাম’-এর। আজ সেই বাগানের সেট সরঞ্জাম লুটোচ্ছে পথের ধুলায়। নাট্যব্যক্তিত্ব মনোজ মিত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি বর্ধিত হারে ভাড়া দিচ্ছিলেন না বাড়ির মালিককে। তাছাড়া দক্ষিণ কলকাতার ‘সুন্দরম’-এ হচ্ছিল না ঠিকমত রিহার্সাল।
একদিকে মনোজ মিত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বাড়ি ভাড়া ঠিকমত দিতে নাকি গড়িমসি করছিলেন। ফলে বাধ্য হয়ে বাড়ির মালিককে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়। অন্যদিকে সুন্দরমের তরফে দাবি, ঘর ফাঁকা করার বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি মনোজ মিত্রকে। ‘সুন্দরম’-এর সদস্যদের দাবি, রেন্ট কন্ট্রোলে নিয়মিত বাড়ি ভাড়া দেওয়া হত। তারপরেও এইভাবে তাঁদের উৎখাত করায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন নাট্যদলের কর্মীরা। এই বিষয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘সুন্দরম’ ভাড়াবাড়ি থেকে দলের সব সরঞ্জাম বার করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, মালপত্র বার করার নামে আদপে গুন্ডাগিরি করেছে লোকজন। ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি। চুরি গেছে বেশ কিছু জরুরি সরঞ্জাম। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে শূন্য ‘সুন্দরম’-এর সামনে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদে পথে নেমেছেন গৃহহারা ‘সুন্দরম’-রা।