২০১৫-র এপ্রিলে মারা যান বেহালার জেমস লং সরণির বাসিন্দা বীণা মজুমদার। এফসিআইয়ের প্রাক্তন কর্মচারি ছিলেন বীণাদেবী। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি তাঁরা জানতেন বীণাদেবীর নশ্বর দেহ পিস হাভেনে রাখার পর এক সময় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করে পরিবার। অভিযোগ, পিস হাভেন নয়, গত ৩ বছর ধরে বাড়িতেই ফ্রিজের মধ্যে মায়ের মরদেহ মমি করে রেখেছিল বৃদ্ধার ছেলে শুভব্রত মজুমদার। পাড়ায় উচ্চশিক্ষিত হিসেবে পরিচিত শুভব্রত বানতলায় একটি বহুজাতিক সংস্থায় একসময় চাকরিও করত। কিন্তু ৫ বছর আগে চাকরি ছেড়ে দেয় শুভব্রত। প্রতিবেশিদের দাবি, পাড়ার কারোর সঙ্গেই তেমন মেলামেশা ছিল না মজুমদার পরিবারের। তাই মজুমদার বাড়িতে কি রহস্য জমাট বেঁধেছিল তা এতগুলো বছরে টেরও পাননি প্রতিবেশিরা। বুধবার সূত্র মারফত খবর পেয়ে রহস্য উন্মোচন করে পুলিশ।
গত বুধবার রাতে শুভব্রত মজুমদারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ফ্রিজ থেকে বীণাদেবীর কাটাছেঁড়া দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় বেশ কয়েকটি রাসায়নিক ভর্তি জার। পুলিশের অনুমান, দেহে পচন ধরা আটকাতেই মৃতদেহে রাসায়নিক মাখিয়ে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল মৃতার ছেলে। বীণাদেবীর স্বামীর দাবি, ছেলে মায়ের দেহে প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাঁকে। তাছাড়া ফ্রিজে দেহ সংরক্ষণের কথা কানাকানি না হওয়ার জন্য ছেলে তাঁকে চাপ দিত বলে দাবি প্রাক্তন সরকারি কর্মচারি বৃদ্ধের।
এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে পুলিশের হাতে। বৃদ্ধার মৃত্যুর পরও তাঁর আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে পেনশনের টাকা তুলত ছেলে। সব কিছু জেনেও মৃতার স্বামী কী কেবলই অলৌকিক বিশ্বাসের কারণে মুখ বন্ধ করে ছিলেন? কেন দেহ সংরক্ষণের নামে মায়ের শরীর কেটে অন্ত্র বার করেছিল শুভব্রত? এই সমস্ত দিক এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।