শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ সাইকেলে চেপে স্কুলে যাচ্ছিল সুহানি গুপ্ত। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া সে। সাইকেলের পিছনে বসেছিল তার বান্ধবী অঞ্জলি মাহাত। স্কুলে যাওয়ার তাড়া ছিল। তাই একটু তাড়াতাড়ি সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিয়ে তারাতলা মোড়ের কাছে রাস্তা পার হতে যায় সে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সাইকেলের পিছন দিক থেকে দুরন্ত গতিতে ছুটে আসছিল একটি ক্রেন। সেই ক্রেন ধাক্কা মারে কিশোরীর সাইকেলে। সাইকেলের বাঁদিকে পড়ে যায় কিশোরীর বান্ধবী। আর টাল সামলাতে না পেরে ডান দিকে পড়ে যায় সুহানি। ক্রেনের চাকা পিষে দেয় তার মাথা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। চোখের সামনে কিশোরীর এমন ভয়ানক পরিণতি দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। অবস্থা বেগতিক দেখে এলাকা ছেড়ে পালায় ক্রেনের চালক। ক্ষিপ্ত জনতা ব্যাপক ভাঙচুর চালান ক্রেনটিতে। জনতার রোষের মুখে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি বাসও। ছাত্রীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বজবজ ট্র্যাঙ্ক রোড দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসী। ফলে অফিস টাইমে তীব্র যানজট তৈরি হয় এলাকায়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মৃত ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করতে এসে এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়েন পুলিশ আধিকারিকরা। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে মৃত ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
২০১৭-র ২ নভেম্বর। তারিখটা আজও ভুলতে পারেননি বেলেঘাটা নিবাসী রবীন্দ্রনাথ দাস ও তাঁর পরিবার। ওইদিন ছোট মেয়ে শ্বেতাকে সাইকেলের পিছনে বসিয়ে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন কিশোরীর বাবা। কিশোরীর স্কুল যাওয়া আর হয়নি। রাস্তা পার হতে গিয়ে দুরন্ত গতির ক্রেনের চাকা পিষে দিয়েছিল শ্বেতার মাথা। সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা থেকেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। তারাতলার মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনাই তার প্রমাণ। অভিযোগ মেট্রোর কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই তারাতলায় পথচারীদের সুরক্ষার দিকে তেমন নজর নেই স্থানীয় প্রশাসনের। যার মাশুল নিরীহ মানুষদের দিতে হচ্ছে বলে দাবি ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর।