নার্সিং ছাত্রীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল বাইপাস সংলগ্ন পিয়ারলেস হাসপাতাল চত্বর। অভিযোগ, সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদ করতে গেলে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা ছাত্রীদের গায়ে হাত তোলে। খবর সংগ্রহ করতে গেলে মারধর করা হয় কয়েকজন চিত্র সাংবাদিককেও। ভেঙে দেওয়া হয় তাঁদের ক্যামেরা। হাসপাতালে উত্তেজনার খবর পেয়ে পরে পঞ্চসায়র থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। সম্প্রতি পিয়ারলেস হাসাপাতালে নার্সিং পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। খারাপ ফল করা ছাত্রীদের অভিভাবকদের বৃহস্পতিবার ডেকে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রশিক্ষণরতা ছাত্রীদের দাবি, বৈঠকে কয়েকজন ছাত্রীকে খারাপ ফলাফলের জন্য তাঁদের অভিভাবকদের সামনেই অপমান করা হয়। অপমানজনক কথা বলা হয় ছাত্রীদের অভিভাবকদেরকেও। তিরস্কৃত ছাত্রীদের মধ্যে ছিল নার্সিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রিঙ্কি ঘোষ। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় রিঙ্কি ঘোষের ঝুলন্ত দেহ। পিয়ারলেস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এরপর হাসপাতাল চত্বরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃত ছাত্রীর সহপাঠীরা।
অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই নার্সিংয়ের ছাত্রীদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই চাপ ও অপমান থেকেই রিঙ্কি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে দাবি মৃতার বান্ধবীদের। ঘটনার প্রতিবাদে এবং বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই হস্টেলের সামনে আন্দোলন শুরু করেন তাঁর সহপাঠীরা। কিন্তু বিক্ষোভরত ছাত্রীদের হাসপাতালের পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। খবর সংগ্রহ করতে গেলে নিগ্রহের শিকার হন সাংবাদিকরাও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে শুক্রবার ফের বিক্ষোভে সরব হন নার্সিংয়ের ছাত্রীরা। যতক্ষণ না বিচার হচ্ছে ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। হাসপাতাল চত্বরে কোনও অশান্তি রুখতে এবং চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ ছাত্রীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।