চেন্নাইয়ের চিকিৎসকেরা উড়ে গেলেন বেঙ্গালুরু। সেখানে তখন ব্রেন ডেথ অবস্থায় পড়ে আছেন পথ দুর্ঘটনার শিকার ডিকে বরুণ। তাঁর পরিবারের সম্মতি নিয়ে তাঁর সক্রিয় হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয় কলকাতার ফর্টিস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দিলচাঁদ সিংয়ের দেহে। শরীর থেকে হৃদযন্ত্র বার করার পর তা ৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। সেইমত পুরো ব্যবস্থা সাজানো হয়।
সোমবার সকাল ৭টাতে বেঙ্গালুরুতে ডিকে বরুণের দেহ থেকে বার করে নেওয়া হয় হৃদযন্ত্র। তারপর তা সযত্নে সবরকম সুরক্ষা বলয়ে বাক্সবন্দি করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নিয়ে যাওয়া হয় বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর। সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসকেরাও। সেখানে তখন অপেক্ষা করছিল একটি চার্টার্ড বিমান। তাতে করে হৃদযন্ত্র যতদ্রুত সম্ভব উড়িয়ে আনা হয় কলকাতা। কলকাতা বিমানবন্দরেও সব তৈরি ছিল। মুহুর্তে হৃদযন্ত্র ভর্তি বাক্স নামিয়ে তা অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। তৈরি ছিল পুলিশও। গ্রিন করিডর তৈরি রেখেছিলেন তাঁরা। তাই অ্যাম্বুলেন্স বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে দ্রুত গতিতে কোথাও কোনও বাধা ছাড়া ফাঁকা রাস্তা ধরে মাত্র ২০ মিনিটে পৌঁছে যায় বাইপাসের ওপর ফর্টিসে। সেখানে অ্যাম্বুলেন্স আসার পরই হৃদযন্ত্রের বাক্স নিয়ে যাওয়া হয় সোজা অপারেশন থিয়েটারে। সেখানেও তখন অপারেশনের জন্য সবকিছু সাজানো। চিকিৎসকেরাও তৈরি। সময় নষ্ট না করে শুরু হয় অপারেশন।
পূর্ব ভারতে এমন অপারেশন এই প্রথম। ফলে চিকিৎসকদের মধ্যেও যেমন কী হয়, কী হয় ভাব ছিল। ঠিক তেমনই ছিল উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি থেকে হাসপাতালে আসা অন্য লোকজনের। অপারেশন চলে ২ ঘণ্টার কিছু বেশি সময়। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে চিকিৎসকেরা জানান, অপারেশন সফল। তবে এখনই সবকিছু ঠিক আছে বলা যাচ্ছেনা। ২ দিন ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে দিলচাঁদ সিংকে। তবে তাঁর দেহে প্রতিস্থাপিত করার পর ডিকে বরুণের হৃদযন্ত্র কাজ শুরু করেছে। এটা অবশ্যই ভাল খবর।