কসবায় সরকারি আধিকারিকের মৃত্যু রহস্যের কিনারা করে ফেললেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। তাও মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। প্রৌঢ়া শীলা চৌধুরীকে খুনের অভিযোগে পরিচারক শম্ভু কয়ালকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শম্ভু জেরায় শীলাদেবীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে। পুলিশের কাছে শম্ভু দাবি করেছে শীলা চৌধুরী তার কাছ থেকে ২৭ হাজার টাকা ধার করেছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরেই সেই টাকা দিতে ঘোরাচ্ছিলেন তিনি। গত শনিবার ওই টাকা ফেরতকে কেন্দ্র করে শীলা চৌধুরীর সঙ্গে শম্ভুর প্রথমে ঝগড়া শুরু হয়।
শম্ভুর দাবি, ঝগড়া চলাকালীন মাথা গরম করে সে শীলা চৌধুরীর মাথা বেশ কয়েকবার দেওয়ালে ঠুকে দেয়। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে শীলাদেবীর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে হত্যা করে। ঘটনাটিকে নিছকই একটি দুর্ঘটনার রূপ দিতে সে এরপর গ্যাসের নব খুলে দেয়। জ্বালিয়ে দেয় শীলাদেবীর একটি নাইটি। তার আশা ছিল ওই আগুন থেকেই একসময়ে গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হবে। মুছে যাবে অপরাধের সব তথ্যপ্রমাণ। কিন্তু আদপে তেমন কিছুই হয়নি। ফলে সবদিক খতিয়ে দেখে শম্ভু কয়ালকে আগেই আটক করে পুলিশ। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। সেখানেই একসময়ে ভেঙে পড়ে সব কথা কবুল করে শম্ভু।
পুলিশ আরও একটি দিক জানতে পেরেছে। স্বামী হারা শীলাদেবীর সঙ্গে নাকি বেশ কয়েকজনের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই তালিকার একজন শম্ভুও। হাঁটুর বয়সী শম্ভুর সঙ্গে শীলাদেবীর বিশেষ সম্পর্ক ছিল বলেই জানতে পেরেছে পুলিশ। এদিকটি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। তবে সব কিছুর পরও একটা প্রশ্ন এখনও রয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক শীলা চৌধুরীর অর্থের অভাব ছিলনা। মোটা টাকার বেতন পেতেন তিনি। তারপরও এক পরিচারকের কাছ থেকে তিনি মাত্র ২৭ হাজার টাকা ধার করেছিলেন কেন? আর যদি করেও থাকেন তবে তা শোধ দিতে তাঁর তো কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়! তাহলে কেন তিনি সেই টাকা দিতে চাইছিলেননা? এসব প্রশ্ন পুলিশকেও ভাবাচ্ছে। সেসব দিক উন্মোচনের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এদিকে খুনের কথা স্বীকার করার পর শম্ভু কয়ালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।