Kolkata

বাবা-মাকে হারানোর শোক, আত্মঘাতী ১৯ বছরের তরুণী

মা-বাবার অকাল প্রয়াণ সন্তানকে যে কী ভয়ংকর অবসাদের গ্রাসে নিয়ে যেতে পারে তার চরম উদাহরণ হয়ে রইল তিলজলার উত্তরা চৌধুরীর মৃত্যু। মাত্র ১৯ বছর বয়স। হেড়ম্বচন্দ্র কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ঝকঝকে এই তরুণী সবে জীবনের রঙে রাঙাতে শুরু করেছিলেন নিজেকে। সোশ্যাল সাইটে ছিলেন অ্যাকটিভ। কিন্তু এমন এক প্রাণবন্ত ঝলমলে তরুণী বেছে নিলেন জীবনকে শেষ করার পথ। গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় বাড়ির দোতলার ঘর থেকে উদ্ধার হল তাঁর নিথর দেহ।

জানা গেছে, উত্তরার বাবা ভুগছিলেন কিডনির অসুখে। তাঁর ২টি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর উত্তরা ওরফে জুলির মা স্বামীকে তাঁর কিডনি দান করেন। কিন্তু তাতেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ২০১৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই শোক মাকে জড়িয়ে অনেক কষ্টে ভুলেছিলেন উত্তরা। মা-মেয়ের সেই বন্ধনের শিকড় যে কোন গভীরে প্রবেশ করেছিল তা বোঝা গেল শুক্রবার রাতে।


বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন উত্তরার মা। ভর্তি ছিলেন একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই শুক্রবার সন্ধেয় মৃত্যু হয় তাঁর। মায়ের মৃত্যুর খবর কানে আসার পর নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন উত্তরা। বাড়িতে তখন অনেক আত্মীয়। তাঁরা ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে অবশেষে দরজা ভেঙে ফেলেন। ভিতরে ঢুকে দেখেন ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে সিলিং থেকে ঝুলছেন জুলি। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। দ্রুত তাঁকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জুলিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে তাঁদের প্রাথমিক অনুমান বাবা-মাকে হারানোর পর একমাত্র সন্তান জুলিকে যে অবসাদ গ্রাস করেছিল, সেই একাকীত্বের অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে তিনি এই চরম পরিণতির পথ বেছে নেন। বাবা-মা ২ জনকেই হারানোর শোক তাঁর এই ১৯ বছরের জীবনে সহ্য করা সম্ভব হয়নি।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button