
কাকের ডাকে নয়, বুধবার শহরের ঘুম ভাঙল প্রবল বজ্র নির্ঘোষ আর মেঘের গুড়গুড় শব্দে। ঘুম জড়ানো চোখে পর্দার পিছনে জানালা দিয়ে ক্ষীণ আলো দেখা যাচ্ছে। প্রবল হাওয়া ধাক্কা মারছে বন্ধ জানলায়। চমকে উঠে বাইরে যেতেই মন ভাল করা একটা হাওয়ার ঝাপটা এসে আছড়ে পড়ল শরীরে। ঝড় হচ্ছে। ভাল লাগার আবেশটা চট করে কাটিয়ে শুকোতে দেওয়া জামাকাপড় তোলা শুরু করল শহরবাসী। যে কটা জানলা দরজা খোলা সেগুলোও দ্রুত চলল বন্ধ করার কাজ। ততক্ষণে যদিও ঝড় থেমেছে। আকাশ কালো করা সকালে শুরু হয়েছে ঝির ঝির বৃষ্টি। বেশ বোঝা গেল শরীর থেকে সব উত্তাপ হুহু করে বেরিয়ে আসছে। দেহটাকে ক্রমশ জড়িয়ে ধরছে বৃষ্টি ভেজা শীতল হাওয়া। এরপরটা শুধুই স্বপ্ন। প্রাণ জুড়িয়ে সেই বারিধারা ক্রমশ ভারী বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়তে থাকল রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, ছাদ, চিলেকোঠায়। বেশ কিছুদিন ধরে প্রবল গরমে নাজেহাল শহরবাসী। সঙ্গে দোসর হয়েছে অস্বস্তিকর ঘাম। ফলে একটা ভাল বৃষ্টির আসায় বেশ কিছুদিন ধরেই বুক বাঁধছিল সকলে। আবহাওয়া দফতর গত রবিবার জানিয়েও ছিল আগামী ৪৮ ঘণ্টায় প্রবল ঝড়, বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন অংশে। বুধবার সকালে কোনও আগাম আভাস ছাড়াই মিলে গেল সেই পূর্বাভাস। এদিন সকাল আটটা পর্যন্ত অধিকাংশ জায়গাতেই ঝেঁপে বৃষ্টি হয়েছে। তারপর বৃষ্টি চললেও কোথাও তা হয়েছে ঝিরঝির করে, কোথাও বা তার চেয়ে জোরে। এদিকে সকালে মন ভাল করলেও বৃষ্টির জেরে জমা জলে বেলা বাড়লে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। অফিসমুখী মানুষজন রাস্তায় বেড়িয়ে জমা জলের শিকার হন অনেক জায়গায়। শহরে ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টি মানে কিছু সমস্যা তৈরি হবেই। সে সমস্যা এদিনও হয়েছে। কিন্তু প্রবল গরমের অস্বস্তি কাটিয়ে যে স্বস্তি সকাল সকাল শহরবাসী উপভোগ করলেন সেটাই বা কম কি!