মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর সারা রাত চলেছে উদ্ধারকাজ। বুধবারও তা অব্যাহত। দিনভরই চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। ছোট ছোট টুকরো করে কেটে কেটে ধ্বংসস্তূপ সরানো হচ্ছে। সময় লাগছে। তবে অতি সন্তর্পণের কাজ চলছে। যাতে আর নতুন করে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। এদিকে গত মঙ্গলবার বিকেলে ব্রিজের ৪০ মিটার অংশ ভেঙে পড়ার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছিল নিচে কেউ আটকে নেই তো? চেষ্টা চলে কেউ নিচে আটকে আছেন কিনা তা খুঁজে দেখার। স্থানীয়রা থেকে উদ্ধারকারীরা বারবার ব্রিজের ফাটল দিয়ে নিচের দিকে চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করেছেন ভিতরে কেউ আটকে আছেন কি না? কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি। যদিও বলা হচ্ছে যে অংশ ভেঙে পড়েছে তার তলায় ঠিকাকর্মীদের অস্থায়ী ঘর ছিল। সেখানে যেসব ঠিকাকর্মী বিশ্রাম নিতেন তাঁদের মধ্যে ২ জনের খোঁজ নেই। তবে কী তাঁরা এখনও ব্রিজের তলায় আটকে? সে উত্তর এখনও মেলেনি।
বুধবার ঘটনাস্থলে আসেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞেরা। বিভিন্ন অংশ ঘরে দেখেন তাঁরা। খতিয়ে দেখেন ছোটখাটো দিকও। দীর্ঘক্ষণ সেখানে ছিলেন তাঁরা। এদিকে দিনভরই ছিল পুলিশের পদস্থ কর্তাদের আনাগোনা। উদ্ধারকাজ চলছে। পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, এনডিআরএফ জোর কদমে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে। কিন্তু সেখানেই সমস্যা। এই ব্রিজ সারাইয়ের দায়িত্ব কার, কে ব্রিজের দেখভালের দায়িত্বে সেটাই এখনও পরিস্কার নয়। ফলে পুলিশ এদিন আলিপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে। অজ্ঞাত পরিচয়দের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। ৩০৪, ৩০৮ সহ ৪টি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি থেকে অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা যোগ হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৫ জন আহত। এঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। তার মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে ব্রিজে ভেঙে মৃত যুবক সৌমেন বাগের দেহ এদিন দুপুরে তাঁর বেহালা শীলপাড়ার বাড়িতে আনা হয়। দেহ আসার পর সকলেই ভেঙে পড়েন। পরিবারের সদস্যদের কান্না থামছিল না।
মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙায় চরম সমস্যায় পড়েছেন বেহালা সহ ওই রুটের বাসিন্দারা। ঘুরপথে তাঁদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। তাতেও নিস্তার নেই। ঘুরপথে সময়ও বেশি যাচ্ছে। আবার যানজটের শিকারও হতে হচ্ছে। ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু এই মুহুর্তে এছাড়া যে কোনও উপায় নেই তাও তাঁদের কাছে পরিস্কার।