পুরুষরা মেয়ে সেজে হাজির হন মন্দিরে, বাইরে অপেক্ষায় থাকেন মেকআপ আর্টিস্টরা
যে প্রথা একদিন খেলার ছলে শুরু হয়েছিল, তা এখন প্রতিবছর হাজার হাজার পুরুষকে মেয়ে সেজে এখানে পৌঁছে যেতে আকর্ষিত করে।
সে বহুকাল আগের কথা। তখন কয়েকজন রাখাল বালক গরু চড়াতে হাজির হত এখানে। চারিদিকে তখন সবুজ বনানী। গরুরা যখন মনের সুখে চড়ে বেড়াত, তখন রাখাল বালকরা নিজেদের মধ্যে খেলায় মেতে উঠত। যার একটি খেলা ছিল মেয়ে সাজা।
রাখাল বালকরা মেয়ে সেজে আশপাশের ফুলগাছ থেকে সংগ্রহ করা ফুল নিয়ে হাজির হত একটি পাথরের সামনে। তারপর সেই পাথরে ফুল নিবেদন করত।
নিছকই খেলার ছলে এমনভাবে একদিন ফুল পাথরে দিতেই সেখানে আবির্ভূত হন ঈশ্বর। সেকথা ছড়িয়ে পড়তে সময় নেয়নি। আশপাশে কথাটা জানাজানি হওয়ার পর অনেক পুরুষও ভাবেন তাঁরাও যদি ওই পাথরে ফুল দেন তাহলে ঈশ্বরের দেখা মিলতে পারে। তাঁদের ইচ্ছাপূরণ হতে পারে।
সেই থেকে ক্রমে বাড়তে শুরু করে পুরুষদের মেয়ে সেজে এই পাথরে ফুল নিবেদন। ক্রমে এই পাথর দেবতার রূপ পেল। তৈরি হল বিশাল মন্দির। ভক্ত সমাগম বাড়তে লাগল। আর কথিত আছে, ওই পাথরটিও নাকি সময়ের সঙ্গে বড় হতে থাকে।
এখন প্রতিবছর বসন্তে ১৯ দিন ধরে কেরালার কোল্লামের চাভারায় অবস্থিত কোট্টানকুলাঙ্গারা দেবীর মন্দিরে উৎসব হয়। এখানে দেবী বলতে এই পাথর পূজিত হয়।
এই ১৯ দিনের উৎসবের শেষ ২ দিনে দূরদূরান্ত থেকেও বিভিন্ন বয়সের পুরুষরা মহিলা বা তরুণী সেজে হাতে প্রদীপ ও থালায় ফুল ও নারকেল নিয়ে এই মন্দিরে পুজো দিতে হাজির হন। এই প্রথাকে বলা হয় কোট্টানকুলাঙ্গারা চামায়াভিলাক্কু।
যেসব পুরুষ মহিলা সেজে উঠতে পারেননা, তাঁদের জন্য মন্দিরের বাইরে মেকআপ আর্টিস্টও পাওয়া যায়। যাঁরা তাঁদের মেয়ে সাজিয়ে দেন।