মহাকুম্ভে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট, বন্ধ হল ঘাট, দুপুর গড়িয়ে স্নান করলেন আখড়ার সাধু সন্তরা
মহাকুম্ভে অমৃত স্নানের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল মৌনী অমাবস্যায় পুণ্যস্নান। সেখানেই রাতে ঘটে গেল পদপিষ্টের ঘটনা। ফলে আখড়ার সাধু সন্তদের স্নান পিছিয়ে গেল দুপুরে।
মৌনী অমাবস্যায় মহাকুম্ভে যে পুণ্যার্থীদের ভিড় সর্বোচ্চ হতে চলেছে তা আগে থেকেই পরিস্কার ছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ মৌনী অমাবস্যায় প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করার জন্য হাজির হতে শুরু করেছিলে ২ দিন আগে থেকেই।
মৌনী অমাবস্যার দিন রাত ১ থেকে ২টোর মধ্যে সঙ্গম ঘাটে স্নান করার জন্য পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়তেই থাকে। এমন পরিস্থিতি হয় ওই জায়গায় যে সবচেয়ে বেশি যত মানুষ থাকা সম্ভব তার চেয়েও লাখ খানেক মানুষ বেশি হাজির হয়ে যান।
শুরু হয় বেড়া ধরে টানাটানি। বেড়া টপকানোর চেষ্টা। এরমধ্যেই শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। আর তাতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। যাতে মানুষের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকে আহতও হন।
আহতদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় পুণ্যার্থীদের পোশাক, জুতোর পাটি, ব্যাগ। পুলিশ দ্রুত সঙ্গম ঘাট ফাঁকা করে দেয়।
ঘোড়সওয়ার পুলিশ নামিয়ে পুণ্যার্থীদের সেখান থেকে সরানো হয়। যদিও তাতে আতঙ্কিত হতে মানা করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তবে বন্ধ করে দেওয়া হয় সঙ্গম ঘাটে স্নান।
এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডলে সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সকালে ব্রহ্ম মুহুর্তে স্নান অবশ্য অন্যান্য ঘাটে হয়েছে।
পদপিষ্টের ঘটনার প্রভাব পুণ্যস্নানে বা মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনায় ভাটা ফেলতে পারেনি। কেবল তাঁদের কাউকে সঙ্গম ঘাটের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেয়নি প্রশাসন।
মৌনী অমাবস্যার অমৃত স্নানে অংশ নেন আখড়ার সাধু সন্ত, নাগা সন্ন্যাসীরা। অমৃত স্নানের দিনের প্রথম স্নান তাঁদেরই করা প্রাচীন পরম্পরা। সাধুদের স্নানের পরই সাধারণ মানুষ স্নান করেন।
এদিন কিন্তু তা আর হয়নি। সাধারণ মানুষ স্নান করতে শুরু করেন। আখড়াগুলি সকালেই পদপিষ্টের ঘটনায় সমবেদনা ব্যক্ত করে। এটাও জানিয়ে দেয় যে তারা আর তাদের আরাধ্য দেবতাকে নিয়ে স্নান করতে যাবেনা।
সাধুরা স্নান করতে যেতে চান না জানতে পেরে আখড়াগুলির সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনিই অনেক বুঝিয়ে তাদের রাজি করান।
দুপুরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীতে অবশেষে আখড়াগুলি এক এক করে স্নান করতে আসে। তবে তারা যে মুহুর্তে স্নান করে থাকে সে সময়ে স্নান করতে পারেনি। তবে পুণ্যস্নান করেছেন আখড়ার সাধুরা।
এদিন অন্য ঘাটগুলিতে সাধারণ মানুষ দিনভরই স্নান করেছেন। কেউ ৩টি ডুব তো কেউ ৫টি, কেউ আবার ২১টি ডুব দিয়েছেন। তবে মৌনী অমাবস্যার দিন পদপিষ্টের ঘটনায় প্রশাসনিক গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা