Mythology

এই জগতে অমৃতের দু-চার ফোঁটা যে জায়গায় পাবেন

একথা নতুন কোনও কথা নয়। বলা কথা আবার নতুন করে বলা। এ কথা পুরাণের কথা। দেবরাজ ইন্দ্রের তপস্যায় প্রীত হলেন নারায়ণ।

একথা নতুন কোনও কথা নয়। বলা কথা আবার নতুন করে বলা। এ কথা পুরাণের কথা। দেবরাজ ইন্দ্রের তপস্যায় প্রীত হলেন নারায়ণ। সিন্ধু কন্যা রূপে লক্ষ্মী দেবীকে জন্মগ্রহণ করতে আদেশ দিলেন তিনি। তারপর দেবতাদের নিয়ে সমুদ্র মন্থন করতে বললেন পিতামহ ব্রহ্মাকে। এ বিশাল কাজ শুধু দেবতাদের পক্ষে করা কিছুতেই সম্ভব নয় বলে সঙ্গে অসুরদেরও নিতে বললেন। মন্থন শেষ হলে দেবী লক্ষ্মী আর ধন্বন্তরি উঠে আসবেন সমুদ্র থেকে। দেবতাদের বৈদ্য ধন্বন্তরি। তিনিই আসবেন অমৃতের কুম্ভ নিয়ে। কথা হল, মন্থনে যা কিছু সম্পদ উঠবে তা সমানভাবে ভাগ করে নেবেন দেবতা ও অসুরেরা।

সমুদ্র মন্থন শুরু হল। এবার ধীরে ধীরে দেব-বৈদ্য ধন্বন্তরি উঠে এলেন অমৃত ভরা কুম্ভ নিয়ে। দেবতাদের পরমধন অমৃত কুম্ভের কথা জানতেন ইন্দ্র। ওই কুম্ভ যাতে দেবতাদের হাতছাড়া না হয়, অসুরদের হাতে না পড়ে, তার জন্য দেব-বৈদ্যের কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে পালাতে বললেন পুত্র জয়ন্তকে। পিতা ইন্দ্রের আদেশ পাওয়া মাত্রই অমৃত ভরা কুম্ভ নিয়ে ছুটতে লাগলেন জয়ন্ত। সমুদ্র মন্থনের একমাত্র সার বস্তুই যে অমৃত, যা পান করলে অমরত্ব লাভ করা যায়।


Kumbh Mela

অসুর গুরু শুক্রাচার্য ব্যাপারটা লক্ষ করে অসুরদের আদেশ দিলেন জয়ন্তকে ধরতে। আগে জয়ন্ত ছুটছেন অমৃত কুম্ভ নিয়ে- পিছনে ছুটছে অসুররা। এইভাবে সমানে তিনদিন ছোটার পর একটু বিশ্রামের প্রয়োজন ভেবে জয়ন্ত বিশ্রাম নিতে বসলেন অমৃত কুম্ভটি মাটিতে রেখে।


দেখলেন অসুররা এসে পড়েছে। আবার ছুটতে শুরু করলেন ইন্দ্রপুত্র। টানা তিনদিন ছুটে বসলেন বিশ্রাম নিতে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজির হলেন অসুররা। আবার কুম্ভ নিয়ে ছুটতে লাগলেন জয়ন্ত। এইভাবে জয়ন্ত তিনদিন পরে পরে অমৃতপূর্ণ কুম্ভ নামিয়ে রেখেছিলেন চার জায়গায় এবং বারোদিন পরে ফিরে এলেন সমুদ্র মন্থন ক্ষেত্রে। কুম্ভ নিয়ে পালানোর সময় জয়ন্ত হরিদ্বার, প্রয়াগ, নাসিক আর উজ্জয়িনীতে অমৃত কুম্ভ নামিয়ে রেখে বিশ্রাম করেছিলেন। কুম্ভ নামানোর সময় কয়েক ফোঁটা পড়েছিল হরিদ্বার ও প্রয়াগে। তাই হরিদ্বার ও প্রয়াগের কুম্ভকে ‘মহাকুম্ভ’ বলা হয়। প্রতি ১২ বছর অন্তর পূর্ণকুম্ভ ও প্রতি ৬ বছর অন্তর অর্ধকুম্ভ হয় হরিদ্বার ও প্রয়াগরাজ নাসিক আর উজ্জয়িনীতে। ছবি – শিবশংকর ভারতী

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button